সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
যে দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সঙ্গে সাইকেলের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য সেই ভিয়েতনামে ইতিহাস গড়লেন তিন বাঙালি সাইকেল অভিযাত্রী।
কলকাতা পুলিশের ” সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ” এবং পরিবেশ রক্ষার বার্তা নিয়ে
ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় থেকে দানাং পর্যন্ত প্রায় 900 কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিলেন তিন বাঙালি। এভারেস্ট জয়ী মলয় মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই অভিযাত্রী দলে ছিলেন দেবাশিস চক্রবর্তী ও পার্থপ্রতিম হাজরা। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস এর অঙ্গ হিসেবে “ট্রেল অন প্যাডেল” এর এই অভিযানের যাত্রাপথ ঐতিহাসিক হো চি মিন ট্রেইল, কখনো হাইওয়ে আবার কখনো শহর ছাড়িয়ে গ্রামীণ ভিয়েতনামের নিনহ বিনহ ( ninh binh ), ফোঙ নহা, হিউ হয়ে দানাং সমুদ্র সৈকতে শেষ হয়। হ্যানয়ে ভারতীয় দুতাবাসের ডেপুটি চ্যান্সেলরের হাত থেকে পতাকা নিয়ে শুরু হয় সাতদিনের এই অভিযান যা ভারতীয় ইতিহাসে প্রথম।কখনো জঙ্গল পথে আবার কখনো পাহাড়ি চড়াই-উৎরাই অথবা গ্রামীণ ভিয়েতনামের মেঠো পথে ‘আকাশটাকে চোখে রেখে’ ধেয়ে চলে দ্বিচক্রযান। কখনো নদীর ধার ঘেঁষে বা সমুদ্রের বালুতটে দিগন্তপানে ছুটে চলেন তিন বাঙালি।
ভিয়েতনামে অবস্থিত
ভারতীয় উপ রাষ্ট্রদূত
মিস টোকো অজুনগ্লা জমির অভিযাত্রীদের অভিবাদন জানিয়ে বলেন, এই প্রথম এমন কোনো অভিযানে সামিল হয়েছে ভারতীয় দল।
এই অভিযানে ভিনহ ( vinh ) শহরে খু ডি টিচ কিম লিয়েন গ্রামে অবস্থিত হো চি মিন-এর জন্মভিটেতে সম্বর্ধনা জানানো হয় অভিযাত্রীদের। হো চি মিনের জন্মভিটে ও জন্মগ্রাম ঘুরিয়ে দেখানো হয়। ঐতিহাসিক ভিয়েতনাম যুদ্ধের স্মারক সংগ্রহশালাতেও নিয়ে যাওয়া হয় অভিযাত্রীদের।
ফ্রেঞ্চ উপনিবেশের এই ভিয়েতনামের স্বাধীনতার যুদ্ধে যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহে সাইকেলের ভুমিকা ছিল অনস্বীকার্য। জঙ্গলপথে সামরিক অভিযানে সাইকেলই বাড়তি সুবিধা দেয় ঔপনিবেশিকদের। সেকারণেই ভিয়েতনামে সাইকেলের কদর বরাবরই আলাদা। আর সেই সাইকেলে সওয়ার হয়ে ভিয়েতনামের ঐতিহ্য, তাদের জীবনযাত্রা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চাক্ষুষ করা সত্যিই রোমাঞ্চকর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বভাবতই এই অভিযানকে “ঐতিহাসিক ও পরম প্রাপ্তি” বলে বিবৃত করেন এভারেস্ট জয়ী অভিযাত্রী মলয় মুখোপাধ্যায়।
বাইট — মলয় মুখোপাধ্যায়,
এভারেস্ট জয়ী অভিযাত্রী
