ভারতের কাশ্মীর ও মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ভল্কার তুর্ক। তবে তার এই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি অরিন্দম বাগচি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সামাজিক বৈচিত্র্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণেই এই ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে ভারত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে। অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে ভারত সবসময়ই একটি বহুমুখী ও উদার সমাজব্যবস্থার প্রতিচিত্র। তবে কিছু অপ্রমাণিত ও বাস্তবতা-বর্জিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ভুল ব্যাখ্যা ছড়ানো হচ্ছে, যা প্রকৃত পরিস্থিতির সঙ্গে কোনোভাবেই মেলে না।’
কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে তুর্কের মন্তব্যের জবাবে দিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাশ্মীর আজ শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো, নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে, পর্যটন শিল্প ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। এই ইতিবাচক পরিবর্তনগুলোকে উপেক্ষা করে ভ্রান্ত ধারণার প্রচার করা হয়েছে বলে দাবি ভারতের।
একইভাবে মণিপুর নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তুর্ক। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ভারতকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা বারবারই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।’ সরকারের দাবি, ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সম্পর্কে ভুল ধারণা ছড়ানোর চেষ্টায় কিছু মহল সক্রিয়, অথচ প্রকৃত বাস্তবতা একেবারেই আলাদা।
ভারত আরও অভিযোগ করেছে, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার রিপোর্টে ইউক্রেন, গাজা, আফগানিস্তান থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত বিভিন্ন সংঘাত ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ উঠে এলেও পাকিস্তানের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা জরুরি, বিশেষ করে যখন নির্দিষ্ট একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভিত্তিহীন মন্তব্য করা হচ্ছে।
দিল্লির মতে, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো, বহুত্ববাদী সংস্কৃতি এবং উন্নয়নমূলক অগ্রগতি সম্পর্কে আরও গভীরভাবে বোঝা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ‘ভুল ব্যাখ্যা’ ছড়ানো না হয়।
Leave a comment
Leave a comment
