কসবায় এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে, যা গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিজের আড়াই বছরের সন্তানের দেহ শরীরের সঙ্গে বেঁধে আত্মঘাতী হয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রীও একই পথ বেছে নিয়েছেন। মৃত ব্যক্তির নাম সোমনাথ রায় (৪০) এবং তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায় (৩৫) । এই দম্পতির আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। পরিবার এবং প্রতিবেশীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিনের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদই এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণ।
সোমনাথের শ্বশুরবাড়ির অভিযোগ, তাঁর মামা-মামি এবং মাসি একাধিকবার সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। এমনকি তাঁদের ওপর মানসিক অত্যাচারও করা হচ্ছিল বলে দাবি করেছেন সুমিত্রার আত্মীয়রা। ঘরের দেওয়ালে পাওয়া সুইসাইড নোটেও সম্পত্তি সংক্রান্ত অশান্তির কথা লেখা রয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ওই তিনজনকে আটক করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
সম্পত্তির লড়াইয়ের কারণে এই দম্পতি মানসিক অবসাদের শিকার হয়েছিলেন কি না, তা এখন পুলিশের তদন্তের বিষয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ আবার অন্য এক তত্ত্ব দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, শুধু সম্পত্তি নয়, আর্থিক দেনার চাপও এই ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে। এক প্রতিবেশীর দাবি, মাঝে মাঝেই পাওনাদারেরা সোমনাথের বাড়িতে আসতেন এবং টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিতেন। যদিও কেউ নিজের চোখে সে ঘটনা দেখেননি, তবে এলাকার অনেকে এ বিষয়ে কানাঘুষো শুনেছেন।
সাধারণত, সোমনাথ খুব বেশি মানুষের সঙ্গে মিশতেন না। তাঁর স্ত্রী সুমিত্রাও ছিলেন বেশ অন্তর্মুখী। এমনকি তাঁদের একমাত্র সন্তানকেও পাড়ার অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে দেওয়া হতো না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁরা নিজেদের আরও গুটিয়ে নিয়েছিলেন। পাড়ার কেউ তাঁদের বাড়ির দরজা-জানলা খোলা অবস্থায় দেখেননি। ফলে আত্মহত্যার পরিকল্পনা তাঁরা আগে থেকেই করেছিলেন কি না, সে বিষয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
এই ঘটনার পর কসবায় নিহতদের বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খান। পাশাপাশি, পুলিশের ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সম্পত্তি বিবাদ, আর্থিক সংকট নাকি অন্য কোনো অজানা কারণ—এত বড় এক পরিবারের নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আসল রহস্য কী, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
.