সংসদ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার কেন্দ্রে চলে এলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের এক মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করতে গিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এমন একটি কথা বলে ফেলেন, যা সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে। তখন রাজ্যসভায় অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং।
খাড়গের মন্তব্য শোনার পরই বিজেপি সাংসদরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সরব হন। মুহূর্তের মধ্যেই রাজ্যসভায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা কড়া সমালোচনা করে বলেন, “সংসদের গম্ভীর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এমন মন্তব্য সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য।” পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে থাকলে খাড়গে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বাধ্য হন।
চেয়ার সামলাচ্ছিলেন হরিবংশ নারায়ণ সিং, যিনি খাড়গের মন্তব্য শুনে স্পষ্টভাবে অস্বস্তি প্রকাশ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খাড়গে দ্রুত সাফাই দিয়ে বলেন, “আমার বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এটি কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ছিল না, বরং সরকারের নীতির সমালোচনার উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছিল। যদি আমার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তবে আমি দুঃখিত।”
তামিলনাড়ু ইস্যুতে এর আগেও ধর্মেন্দ্র প্রধানের মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ করেছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, “দেশের কোনো সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীকে অপমান করা হলে, যদি তাদের অসভ্য বলে চিহ্নিত করা হয়, তবে সেই ধরনের মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন বক্তব্য দেওয়া একজন মন্ত্রীর পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। কেন্দ্রীয় সরকার বিভেদের রাজনীতি করছে, যা দেশের ঐক্যের পরিপন্থী।”
এই ইস্যু লোকসভাতেও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ডিএমকে সাংসদরা অভিযোগ তোলেন যে জাতীয় শিক্ষা নীতির মাধ্যমে হিন্দির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা শিক্ষামন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে তার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
ধর্মেন্দ্র প্রধান পরে নিজের বক্তব্য ফিরিয়ে নিলেও, তাতে ডিএমকে সাংসদদের অসন্তোষ কমেনি। তাঁরা মন্ত্রীর প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিতে অনড় থাকেন। এই প্রতিবাদে সামিল হয়ে তৃণমূল সাংসদরাও লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন।
অন্যদিকে, সংসদে এপিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা চালানোর প্রস্তাব খারিজ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল ও বিজেডি সাংসদরা। তাঁদের সঙ্গে বিরোধী দলের অন্যান্য নেতারাও আওয়াজ তোলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, তৃণমূল ও বিজেডি সাংসদরা অধিবেশন বয়কট করে বেরিয়ে যান। বিরোধী শিবিরের অন্য সদস্যরাও সরকারকে চাপে ফেলতে প্রতিবাদ আরও জোরালো করেন, যার ফলে সংসদে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছায়।
Leave a comment
Leave a comment