সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
দোল উৎসবের সঙ্গেই উত্তরের চা বলয়ে সুখবর এনেছে বসন্তের বৃষ্টি। বুধবারের নাছোড় বৃষ্টিতে উল্লসিত চা বাগানের মালিক-শ্রমিক সব পক্ষই। এই দৃষ্টিতে চা পাতার স্বাদ-গন্ধ অনেক ভালো হবে এই আশাতেই বুক বেঁধেছে বাগিচা শ্রমিকরা। বুধবার দিনভর ডুয়ার্স এবং এলাকায় যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয়। রাতেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয় চা বলয়ে। বসন্তের এই বৃষ্টিতে প্রথম ফ্লাশের চা পাতায় স্বাদ ও গন্ধ ফিরবে বলে মনে করছে চা বলয়।
বলে রাখা প্রয়োজন, বৃষ্টিতে চা পাতা ভারি হয়। অর্থাৎ পাতার ওজন বাড়ে। কারণ চা পাতায় রসের সঞ্চার হয়। আর চা পাতার রস বৃদ্ধির কারণে পাতা গন্ধ ও স্বাদে ভরপুর হয়।
প্রসঙ্গত, শীতের শেষ থেকেই চা বলয় চলছে বৃষ্টির অভাব। গত মৌসুমে চা পাতা তোলার কাজ সময়ের আগেই বন্ধ হয়ে যায়। চা পাতা তোলা শুরুর পরেও বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছিল চা গাছ। এবারও সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল চা বলয়ে। শীতের শেষে প্রথম ফ্লাশ চা পাতা তোলা শুরুর পর বৃষ্টির প্রয়োজন হয় চা বাগানে। কিছুদিন আগেই বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। স্মৃতির জল দিয়ে পাতা ও কুড়ি এলেও তাতে স্বাদ ও গন্ধ সেরকম ছিল না। গত মৌসুমেও বৃষ্টির অভাবে চা উৎপাদন মার খেয়েছিল যা বছর ভর ক্ষতির মুখেই দাঁড় করিয়েছিল উত্তরের চা বলয়কে। শুধু চা উৎপাদনে ঘাটতি হয়েছিল তাই নয়, প্রথম ফ্লাশের চা পাতার স্বাদ ও গন্ধ বা গুনমান খারাপ হয় চায়ের দামও কম পেয়েছে উত্তরের চা পাতা। তাই গত মরশুমের মতো এবারও উত্তরের চা বাগানগুলোতে আশঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছিল মালিক-শ্রমিক মহলে। অবশ্য বুধবারের এই বসন্তের বৃষ্টি আশার সঞ্চার করেছে উত্তরের চা বাগান গুলোতে। চা পরিচালকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, বুধবারের এই বৃষ্টি চা বাগান গুলোতে প্রাণ ফিরিয়ে দিল বলা যেতে পারে। কারণ পাতার গুণমানের অভাবে বেশ কিছু ছোট চা বাগান গুলোতে চা উৎপাদন প্রায় বন্ধের মুখে। বসন্তের এই বৃষ্টি চা বাগান গুলোকে আরো সবুজ করার পাশাপাশি অনেক স্বস্তি এনে দিয়েছে তা মানছেন অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাও।