চার বছর ধরে অপেক্ষার পর অবশেষে বড় পর্দায় আসতে চলেছে ‘রঘু ডাকাত’। দর্শকদের কৌতূহলের অবসান ঘটিয়ে কলকাতায় শুরু হচ্ছে শুটিং, যা নিয়ে টলিউডে চলছে জোর আলোচনা। পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই চরিত্রের জন্য দেব দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বহু প্রতীক্ষার পর সব বাধা কাটিয়ে অবশেষে শুরু হতে চলেছে ছবির শুটিং। যদিও প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ বেশ কিছুদিন আগেই এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল, তবে বিভিন্ন কারণে তা এতদিন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
পরিচালকের মতে, সত্যিকারের ভালো সিনেমা তৈরি করতে সময় ও যত্ন দুটোই প্রয়োজন, আর তা তখনই সম্ভব যখন প্রযোজকদের নিরঙ্কুশ সমর্থন মেলে। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “শ্রীকান্তদা, মনিদার মতো অভিজ্ঞ প্রযোজকদের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ সহজ হত না।”
দেবেরও এই ছবির প্রতি আবেগ ও আন্তরিকতা স্পষ্ট। তিনি শুধু প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন না, পাশাপাশি প্রযোজনার দায়িত্বও সামলাচ্ছেন, যাতে সিনেমাটি যথাযথ রূপ পায় এবং দর্শকদের মন জয় করতে পারে।
পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দেব শুধুমাত্র স্ক্রিপ্টের ভিত্তিতে অভিনয় করছেন না, বরং চরিত্রের আত্মা বোঝার জন্য নিজেকে পুরোপুরি বদলে নিয়েছেন। প্রতিদিনের শরীরচর্চার পাশাপাশি কঠোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ঘোড়ায় চড়া ও লাঠিখেলার। বাংলার ঐতিহ্যবাহী রায়বেশে শিল্পীদের সঙ্গেও সময় কাটিয়ে তাদের কাছ থেকে সরাসরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন, যাতে চরিত্রটি বাস্তবসম্মত হয়।
ছবির ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পরিচালক নিজেও। তিনি শৈশবের স্মৃতি মনে করে বলেন, “একবার বইমেলায় বাবা ‘হীরু ডাকাত’ বইটি কিনে দিয়েছিলেন। সেই গল্প আমার মনে গভীর দাগ কেটেছিল, যা আজও ভুলতে পারিনি।”
বাংলার লোকগাথায় ডাকাতদের নিয়ে বহু কাহিনি থাকলেও বড় পর্দায় খুব কম দেখা গেছে, তাই এই গল্প দর্শকদের দেখানো জরুরি।”
পরিচালকের আগের ছবিগুলোর মতোই এটি বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরবে। ধ্রুবর কথায়, “গুপ্তধন সিরিজের মাধ্যমে বাংলার সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি, ‘রঘু ডাকাত’ সেই ধারাবাহিকতাই বজায় রাখবে।”
এই ছবিতে দেবের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ইধিকা পাল ও সোহিনী সরকারকে। দেবের চরিত্রে একাধিক লুক থাকবে বলে ইন্ডাস্ট্রিতে জোর চর্চা চলছে, তবে পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তিনি শুধু জানিয়েছেন, দেবের অভিনয় এই ছবির অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে এবং দর্শকদের নতুন অভিজ্ঞতা দেবে।
ছবির পুরো শুটিং হবে পশ্চিমবঙ্গের নানা ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা লোকেশনে। পরিচালকের মতে, “বাংলার বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য সিনেমায় তেমনভাবে উঠে আসেনি। আমি চাই দর্শকরা বড় পর্দায় আমাদের রাজ্যের অনন্য রূপ অনুভব করুন।”
আগামী দুর্গাপুজোর মরসুমেই মুক্তি পাচ্ছে ‘রঘু ডাকাত’, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই দর্শকদের মধ্যে প্রবল উন্মাদনা তৈরি হয়েছে।
Leave a comment
Leave a comment