কলকাতার লেদার কমপ্লেক্সের দূষিত কেমিক্যাল মিশ্রিত জল ও পৌরসভার অপরিশোধিত নিকাশি জল, বিদ্যাধরী নদীতে প্রবাহিত হয়ে মৎস চাষীদের জীবনে এক অভূতপূর্ব বিপদ সৃষ্টি করেছে। এই নদীটিই ছিল হাড়োয়া, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মৎস্য চাষীদের প্রধান জলাশয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতার লেদার কমপ্লেক্সের থেকে বেরিয়ে আসা দূষিত জল, যা কেমিক্যাল মিশ্রিত, সেই জল এবং পৌরসভার বিভিন্ন দূষিত জল বাকজোলা খাল হয়ে সরাসরি বিদ্যাধরী নদীতে প্রবাহিত হয়ে, মৎস চাষীদের জন্য অগ্নিপরীক্ষায় পরিণত হয়েছে।
এটি শুধু পরিবেশগত ক্ষতি করছে না, বরং মৎস্য চাষীদের আয়ের উপরও বিরাট প্রভাব ফেলছে। মৎস্য চাষীরা জানাচ্ছেন, এই দূষিত জল মিশে যাওয়ার কারণে তারা যে মাছগুলো ফিশারিতে ছাড়েন, সেগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মৎস্য চাষের জন্য যে জল প্রয়োজন, তা এখন বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও গুরুতর বিপর্যয়ের মুখে।
অর্থনীতির বড় একটি অংশ এই মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল। বিশেষত, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, ও সন্দেশখালির মতো গ্রামীণ অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষের জীবিকা এই মৎস্য চাষের সাথে জড়িত। কিন্তু নদীর জল দূষিত হয়ে যাওয়ার ফলে হাজার হাজার মৎস্য চাষী অল্প সময়ের মধ্যে তাদের ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তারা দাবি করেছেন, সরকার যেন এই দূষিত জল পরিশোধন করে নদীতে ছাড়ে, নতুবা এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এলাকার অর্থনীতিতে ব্যাপক আঘাত আসতে পারে।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীতে এই ধরনের কেমিক্যাল মিশ্রিত জল ফেলা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে, এই অঞ্চলের মৎস চাষী ও স্থানীয় জনগণের উপর বিপর্যয় নেমে আসবে, যা মানবিক ও পরিবেশগত সংকট সৃষ্টি করবে।