সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
সরকারপক্ষের সুরে সুর মিলিয়ে বিধানসভায় বিরোধীপক্ষ বিজেপিকে একহাত নিলেন একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। রাজ্যের সম্প্রদায়য়িক সম্প্রীতির পরিস্থিতি বজায় রাখার পরিবর্তে তাতে বিঘ্ন ঘটানোর ভূমিকায় বিজেপির সমালোচনা করেন নওশাদ। রাজ্যে হিন্দু মুসলিম মৈত্রীর সম্পর্কের একাধিক নজির তুলে ধরে নওশাদ বলেন “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করতে সমাজে বিভেদের বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটি সম্প্রদায়কে সহানুভূতি জানানোর নামে সামাজিক ভারসাম্যকে ধ্বংস করা হচ্ছে।” এর আগে সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ তুলে সরব হন। বিধানসভাকে ব্যবহার করে রাজ্যের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার চেষ্টার জন্য বিজেপি সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান সরকারপক্ষের বিধায়করা।
এর পরেই নিজের বক্তব্য পেশ করে যারা এই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে তাঁদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করার ডাক দেন নওশাদ সিদ্দিকী।
উল্লেখযোগ্য, এদিন বিধানসভায় দোল ও হোলি উৎসবে রাজ্যের নানা জায়গায় অশান্তির ঘটনা নিয়ে আলোচনা দাবি করে বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এ বিষয়ে তারা মুলতুবি প্রস্তাবও পেশ করে। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী পক্ষের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষকে ওই মুলতুবি প্রস্তাবের আংশিক পাঠের অনুমতি দিলেও তা নিয়ে আলোচনার অনুমতি দেননি। পাল্টা বিধানসভায় এনিয়ে সরকার পক্ষের বিবৃতি দাবি করেন শঙ্কর। অধ্যক্ষ পাল্টা বলেন, ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর বিধানসভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিবৃতি দিয়েছেন। সুতরাং পুনরায় এনিয়ে আলোচনার প্রয়োজন নেই। এরপরেই সরকার হিন্দু বিরোধী বলে স্লোগান তোলেন বিরোধীপক্ষ। ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে শুরু করেন সরকার পক্ষের একাধিক মন্ত্রী-বিধায়ক। স্লোগান পাল্টা স্লোগানকে কেন্দ্র করে উত্তাপ ছড়ায় বেশ কিছুক্ষণ। এঘটনা নিয়েই বিজেপি পরিষদীয় দলের বিরুদ্ধে রাজ্যের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিস্থিতিতে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগ আনেন সরকারপক্ষের বিধায়করা এবং অধ্যক্ষের কাছে শাস্তির দাবিও করেন তারা। বিজেপি বিধায়কদের শাস্তি প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, “বিধানসভায় বক্তব্য রাখার সময় বাক্য ব্যবহারে সকলের সংযত থাকা উচিত। বিরোধীরা লাগাতার এই ধরনের কাজ করলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিতে তিনি বাধ্য হবেন।”