নয়া সিদ্ধান্ত নিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই এবার ভোটার পরিচয়পত্রের (EPIC) সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্তিকরণের পথে হাঁটতে চলেছে কমিশন। এই প্রক্রিয়া কীভাবে কার্যকর হবে, তা নিয়ে বৈঠক শুরু হয়েছে টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের সঙ্গে।
মঙ্গলবার এই ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, লেজিসলেটিভ ডিপার্টমেন্টের সচিব, আধার সিইও-সহ একাধিক প্রযুক্তিবিদ। বৈঠকের পরেই কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ হবে সংবিধানের ৩২৬ ধারার ২৩(৪), ২৩(৫), ২৩(৬) ধারা এবং রিপ্রেজেন্টেশন অফ পিপলস অ্যাক্ট, ১৯৫০ অনুযায়ী।
কমিশনের মতে, শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, এবং আধার কার্ড নাগরিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্র হিসেবে গণ্য হয়। ফলে আধার সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে ভোটার তালিকার নির্ভুলতা বাড়বে এবং ভুয়ো ভোটারদের চিহ্নিত করা সহজ হবে।
তবে এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ড সংযুক্ত করা হলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। বিশেষ করে, তৃণমূল কংগ্রেস সহ বেশ কিছু দল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এতে ভোটারদের গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন করা হবে। পাশাপাশি, প্রতিটি ভোটারের জন্য ইউনিক EPIC নম্বর ইস্যু করা হবে। কমিশনের মতে, আধারের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হলে এই প্রক্রিয়াটি আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করা সম্ভব হবে।
এই উদ্যোগ ভোটারদের নিরাপত্তা ও পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে কমিশনের বক্তব্য, এই সংযুক্তিকরণ স্বেচ্ছাসেবী হবে এবং কোনও নাগরিকের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ণ হবে না।
দেশজুড়ে নজর রয়েছে, শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কীভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং তা ভোটারদের ওপর কী প্রভাব ফেলে।