স্নিগ্ধা চৌধুরী
ফিরলেন তাঁরা! দীর্ঘ নয় মাসের বন্দিদশা কাটিয়ে অবশেষে পৃথিবীর মাটিতে পা রাখলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং আমেরিকান নভোচর ব্যারি বুচ উইলমোর। বুধবার ভোররাতে (ভারতীয় সময়) স্পেস এক্স-এর মহাকাশযান সফলভাবে অবতরণ করেছে ফ্লোরিডার সমুদ্রে। তাঁদের সঙ্গে ফিরেছেন আরও দুই নভোচারী—নাসার নিক হগ এবং রুশ মহাকাশচারী আলেকজ়ান্ডার গর্বুনভ। কিন্তু এই প্রত্যাবর্তনের মধ্যেই নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক!
সুনীতাদের দীর্ঘ মহাকাশ বন্দিদশার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি বাইডেন সরকারকে দায়ী করেছে। স্পেস এক্স-এর কর্তা ইলন মাস্কও সেই সুরেই কথা বলছেন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণেই তাঁদের এতদিন মহাকাশে আটকে রাখা হয়েছিল।
২০২৪ সালের জুন মাসে বোয়িং স্টারলাইনারে করে মহাকাশে যান সুনীতারা। আট দিন পরই ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস! মহাকাশযানে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে ফেরার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দিন কেটেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (ISS) প্রতিকূল পরিবেশে। শূন্য অভিকর্ষের মধ্যে শরীরের উপর চরম ধকল, সঙ্গে অজানা অনিশ্চয়তা। অবশেষে ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপেই তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন খোদ ট্রাম্প এবং ইলন মাস্ক।
যদিও পৃথিবীতে ফিরে এলেও এখনই বাড়ি যেতে পারবেন না চার মহাকাশচারী। কয়েক সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে তাঁদের। দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকার ফলে শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। তাছাড়া, তাঁদের শরীরে অজানা মহাজাগতিক জীবাণুর অস্তিত্ব থাকতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একইভাবে, পৃথিবীর জীবাণুদের সংস্পর্শেও তাঁরা সহজেই সংক্রামিত হতে পারেন। তাই কোয়ারেন্টিনই একমাত্র নিরাপদ পথ।
সুনীতাদের ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাকযুদ্ধ। ট্রাম্প বলেন, আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি। মাস্কের দাবি, বাইডেন প্রশাসনের গাফিলতিতেই এতদিন মহাকাশে বন্দি ছিলেন তাঁরা। যদিও হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, আমরাই তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে এনেছি!
তবে সত্য যা-ই হোক, দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন সুনীতারা। আর তাঁদের এই প্রত্যাবর্তন মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় হয়ে থাকবে!