বাংলাদেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের গুঞ্জন! রাজধানী ঢাকাসহ সকল প্রধান শহরে ব্যাপকভাবে সামরিক কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারাও একটি বৈঠক করেছেন। এর ফলে ইউনূস সরকারের অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা জোরদার হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণ করে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর ইতিমধ্যেই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা রয়েছে। মোহাম্মদ ইউনূস এবং সেনাপ্রধান ওয়াকার জামান এখনও অভ্যুত্থানের আলোচনার বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
সোমবার বাংলাদেশ সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী একটি জরুরি সভা করে । বৈঠকে পাঁচজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল, আটজন মেজর জেনারেল (জিওসি), স্বাধীন ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার এবং সেনা সদর দপ্তরের অফিসার সহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এটি ইউনূসের অভ্যুত্থানের মতো কিছু বড় ঘটনার আলোচনাকে আরও জোরদার করেছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সেনাপ্রধান নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গত কয়েকদিনে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সম্পূর্ণরূপে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। ঢাকার রাস্তায় সৈন্য এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। সৈন্যরা রাস্তার ধারে তাদের চেকপয়েন্টও স্থাপন করেছে, যেখানে যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। যদিও প্রাথমিকভাবে এটিকে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল, জেনারেল জামানের বৈঠকের পর অভ্যুত্থানের আলোচনা জোরদার হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনূস এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। উভয় পক্ষ থেকেই এমন কিছু বিবৃতি এসেছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার এবং সেনাপ্রধানের মধ্যে মতপার্থক্য এখন আরও বেড়েছে এবং সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ছাত্র সংগঠন আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ অভিযোগ করেছেন, সেনাপ্রধান জামান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের সাথে একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। গত বছর জুন-জুলাই মাসে, বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের পর, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। ৫ আগস্ট হাসিনা ঢাকা ত্যাগ করার পর, সেনাবাহিনীর সহায়তায় মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি সরকার গঠিত হয়। তবে কিছুক্ষণ পর ইউনূস এবং সেনাপ্রধানের মধ্যে উত্তেজনার খবর আসতে শুরু করে। সেনাপ্রধান সাম্প্রতিক দিনগুলিতে সরকারের কার্যকারিতার প্রতি প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, যার কারণে ইউনূসের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের কথা বলা হচ্ছে।