গোটা পৃথিবী এখন একটা বিশেষ অ্যানিমেশন ছবির জ্বরে আক্রান্ত।সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই এখন চেনাজানা সকলের একটাই স্টাইলের ছবি, নাম যার গিবলি। আট থেকে আশি সকলেই খোঁজ করছে এই গিবলি আর্টের।বলিউডের নায়ক নায়িকার ছবি থেকে শুরু করে নিজস্ব ছবি, সবাই এখন গিবলিতে মেতে।পৃথিবীর যে কোনও স্মরণীয় মুহূর্ত বা ভয়ঙ্কর ঘটনা, ফেসবুক-ইন্সটাগ্রাম বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজির তার গিবলি সংস্করণ। এমন কি গিবলির স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন সেলেবরাও।
কোথা থেকে এল গিবলি?
স্টুডিয়ো গিবলি হল জাপানিজ একটি অ্যানিমেশন কোম্পানি। ১৯৮৫ সালে, জাপানের টোকিয়োতে এর জন্ম।হায়াও মিয়াজাকি এর প্রতিষ্ঠাতা।একটা নিজস্ব স্টাইল রেখে অ্যাক্রেলিক রং দিয়ে হাতে আঁকা হয় ওই স্টুডিয়োর সমস্ত অ্যানিমেশন। সেই সব অ্যানিমেশন দেখলেই বোঝা যায় সেই ছবি তৈরি হয়েছে স্টুডিয়ো গিবলিতে।জাপানের ওই অ্যানিমেশনের জনপ্রিয়তা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের দরবারে।পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় বিখ্যাত অ্যানিমেশন কোম্পানি ওয়াল্ট ডিজনি।গত ৩৮ বছরে ২২টি অ্যানিমেশন ছবি তৈরি করেছে জিবলি স্টুডিয়ো। টেলিভিশনের জন্য বানিয়েছে ৩টি ছবি। মজার কথা হল সেই সব ছবির সুনাম ও চাহিদাও বিপুল। এই গিবলি স্টুডিওয় তৈরি হওয়া ছবি পেয়েছে অস্কার, গোল্ডেন বিয়ার, বাফটা, গোল্ডেন গ্লোবের মত পুরস্কার।সদ্য ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’ পেয়েছে ২০২৪ সালের সেরা অ্যানিমেশন ছবির শিরোপা।কাজেই স্টুডিয়ো গিবলির জনপ্রিয়তা আগে থেকেই ছিল।
হঠাৎ গিবলি নিয়ে এই উন্মাদনা কেন?
হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এই গিবলি ট্রেন্ড শুরু হওয়ার পিছনে রয়েছে ওপেনএআই-র চ্যাটজিপিটির ৪০-এর নতুন ফিচার।এই এআইতে কোনও ছবি দিলেই তা সামান্য সময়ের মধ্যেই জাপানিজ গিবলি অ্যানিমেশন স্টাইলে সেই ছবি তৈরি করে দেওয়া শুরু হয়।তবে এখন বিভিন্ন এআই-এর কল্যাণে গিবলি স্টাইল ছবিতে ছেয়ে যাচ্ছে নেটমাধ্যম। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন্ডিং গিবলি স্টাইলে নিজের ছবি শেয়ার করা।
আপনিও বানিয়ে নিতে পারেন গিবলি ছবি
আপনি ওপেনএআই ছাড়াও জেমিনি এআই প্ল্যাটফর্ম,গ্রক ওয়েবসাইট থেকে গিবলি ছবি তৈরি করতে পারেন।এছাড়াও ডিপএআই, ক্রেয়ন, প্লেগ্রাউন্ড এআই-র মতো থার্ড পার্টি প্ল্যাটফর্ম দিয়েও গিবলি ছবি তৈরি করতে পারেন। আপনি যদি চ্যাটজিপিটি দিয়ে গিবলিকে তৈরি করতে চান তাহলে প্রথমে চ্যাটজিপিটি ওয়েবসাইট খুলে নিন। তারপর সেখান থেকে প্লাস চিহ্ন দেখে সেখান থেকে নিজের ছবি আপলোড করুন। এরপর লিখে নিন গিবলি দিস অথবা টার্ন দিস ইমেজ ইন স্টুডিও গিবলি থিম।এরপরই দেখুন সামান্য সময়ে অতি সহজে নিজের গিবলি ছবিটি হাজির হয়ে গেছে স্ক্রিনে।তা ডাউনলোড করে ব্যবহার করূন নিজের ইচ্ছামতো।
তবে মানুষের এই গিবলি উন্মাদনায় ঘুম ছুটেছে এআই কোম্পানিগুলোর। যেমন ওপেন এআই-র সিইও সাম সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে সাফ লিখেছেন, এই এআই জেনারেটেড ছবি তৈরির যে হিড়িক পড়েছে, তা যেন একপ্রকার পাগলামোর স্তরে চলে গিয়েছে। তিনি সকলকে একটু শান্ত হতে বলে লিখেছেন তাঁর টিমের একটু ঘুম দরকার। কারণ গিবলি-উন্মাদনা কর্মীদের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে।যদিও তিনি বলেছেন এমন সাড়া এর আগে কখনও পাননি তাঁরা।
