স্নিগ্ধা চৌধুরী
হুগলির চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের সাম্প্রতিক বক্তব্য যেন রাজনীতির জগতে নতুন নাটকীয় মোড় এনে দিয়েছে! মঙ্গলবার রাতে কর্মীসভায় যেখানে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন, বুধবার সকালেই যেন এক মায়াবী জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বদলে গেলেন! একদিন আগের জ্বালাময়ী ভাষণের বদলে এল নরম, সামলানো কথার সুর। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি চাপে পড়ে ইউ-টার্ন নিতে বাধ্য হলেন তিনি?
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেবানন্দপুরের কর্মী সভায় অসিত বাবু দলীয় কর্মীদের তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, “আপনাদের দ্বারা কিছু হবে না! ভোটার তালিকা নিয়ে এত ঢিলেমি কেন? আমি যাদের রাজনীতিতে এনেছি, তারাই আজ মন্ত্রী হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর আমি?… আমি রয়ে গেলাম একই জায়গায়!” তিনি বেচারাম মান্না, ইন্দ্রনীল সেন ও স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর নাম সরাসরি উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু ঠিক ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি আসলে কর্মীদের অনুপ্রাণিত করতে চেয়েছি, কিন্তু কিছু মানুষ সেটাকে ভুলভাবে ভাইরাল করেছে! মন্ত্রীদের নাম করতে গিয়ে ভুলবশত ইন্দ্রনীলের নাম চলে এসেছে।” রাজনীতির বোদ্ধাদের প্রশ্ন, তাহলে কি রাতারাতি তাঁর অবস্থান বদলে গেল? নাকি দলীয় চাপে গিয়ে নিজের বক্তব্য ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হলেন?
এই পাল্টা-পাল্টি বক্তব্যকে আরও রঙিন করে তুলেছে রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার প্রতিক্রিয়া। ফেসবুক পোস্টে তিনি তীব্র কটাক্ষ করে লেখেন, “কে কি বলল তাতে কিছু যায় আসে না!” সেই সঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে অসিত বাবুকে ‘লম্পট’ বলেও আক্রমণ করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো ঝড় উঠেছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের অন্দরেই যে বিশাল ফাটল তৈরি হয়েছে, তা ক্রমেই প্রকাশ্যে আসছে। এখন দেখার বিষয়, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই দ্বন্দ্বকে কীভাবে সামলায়। অসিত বাবুর ইউ-টার্ন কি রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক সংকেত, নাকি আরও বড় নাটকের সূচনা? অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল!