ওয়াকফ সংশোধনী বিল অনুমোদন করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সম্প্রতি লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাস হয়েছে এই বিলটি। শনিবার রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর ওয়াকফ সংশোধনী বিলটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে পরিণত হয়েছে। এই নতুন আইনটি ‘ওয়াকফ (সংশোধন) আইন ২০২৫’ নামে পরিচিত হবে, যা ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, নিবন্ধন এবং সরকারি জমির উপর দাবি সম্পর্কিত কঠোর নিয়ম আরোপ করে। ওয়াকফ বোর্ডে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে উত্তপ্ত বিতর্কের পর এই বিলটি পাস হয়। এটি লোকসভায় ২৮৮ ভোট এবং রাজ্যসভায় ১২৮ ভোটে অনুমোদিত হয়। বিজেপি এবং তার মিত্ররা বিলটিকে সমর্থন করে, অন্যদিকে বিরোধী দলগুলি এর বিরোধিতা করেছিল। সরকারের দাবি, এই আইন ওয়াকফ সম্পত্তির অপব্যবহার রোধ করবে এবং তাদের প্রকৃত মালিকদের অধিকার রক্ষা করবে।
নতুন আইনের অধীনে, লিখিত দলিল ছাড়া কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি নিবন্ধিত হবে না। এছাড়াও, সরকারি জমি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে দাবি করার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যদি কোনও জমি বিতর্কিত বা সরকারি জমি হিসেবে পাওয়া যায়, তাহলে তা ওয়াকফে নিবন্ধিত হবে না। এর জন্য কালেক্টরকে তদন্তের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এখন অনলাইন পোর্টালে ওয়াকফ সম্পত্তির সম্পূর্ণ বিবরণ নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক হবে। এবং তা ৬ মাসের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।
আইনটিতে বোহরা এবং আঘাখানি সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক ওয়াকফ বোর্ড গঠনেরও বিধান রয়েছে। এছাড়াও, ওয়াকফ বোর্ডে দুজন অমুসলিম সদস্য এবং মহিলাদের নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের দায়িত্ব এখন জরিপ কমিশনারের পরিবর্তে কালেক্টরের উপর দেওয়া হয়েছে।
এই পরিবর্তনের ফলে ওয়াকফ সম্পত্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যদিও বিরোধীরা এটিকে ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করছে। এই আইনটি জাতীয় স্বার্থে এবং এটি ওয়াকফ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে বলে মত সরকারের।