রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে ফের চড়া সুরে পাকিস্তানকে আক্রমণ করল ভারত। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সদ্য সংঘটিত জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গে সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা হিসেবে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করে দেশটিকে ‘অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য’ বলে কটাক্ষ করলেন রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত ভারতীয় দূত যোজনা পটেল।
‘ভিক্টিম্স অফ টেররিস্ট অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্ক’ (ভোটান)–এর আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পটেল বলেন, “২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বই হামলার পরে পহেলগাঁও কাণ্ডে সবথেকে বেশি নিরস্ত্র মানুষ নিহত হয়েছেন। বিশ্ব আজ দেখছে, পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়েই কীভাবে জঙ্গি কার্যকলাপ পরিচালিত হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ নিজেই টিভি সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এটি একটি খোলা স্বীকারোক্তি এবং এই সত্যকে আর অস্বীকার করার উপায় নেই।”
ভারতের অভিযোগ, পহেলগাঁওয়ে হামলার পেছনে রয়েছে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির হাত। যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ হামলার নিন্দা করলেও কেউই প্রকাশ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি। এই প্রেক্ষিতেই রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারত সরব হয়েছে।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় মঙ্গলবারের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিরস্ত্র পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছ’জন বলে খবর। কর্নাটক থেকে বেড়াতে যাওয়া এক পরিবারের সদস্য মঞ্জুনাথ রাও জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন স্ত্রী ও পুত্র।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে একঘরে করতে কূটনৈতিক চাপ জারি রেখেছে ভারত। বাতিল করা হয়েছে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা, বন্ধ হয়েছে অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত, এমনকি স্থগিত হয়েছে ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু জলচুক্তিও।
রাষ্ট্রপুঞ্জে পটেলের মন্তব্যে স্পষ্ট, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আর কোনও ছাড় নয় আন্তর্জাতিক মহলকে এবার স্পষ্ট অবস্থান নিতেই হবে।