জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করে ‘মা মাটি মানুষকে’ উৎসর্গ মমতার
সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
সমুদ্রের গর্জন যতই থাক না কেন গগনভেদি “জয় জগন্নাথ” গর্জন যেন আজ সমুদ্রকেও ম্লান করল দীঘার সমুদ্র সৈকতে।
মাথায় অস্ত্র ধাতুর নীল সুদর্শন চক্র ও ধ্বজা নিয়ে দীঘার সমুদ্র সৈকতে উদ্বোধন হল জগন্নাথদেবের নতুন ঠিকানা। মা মাটি মানুষকে এই জগন্নাথ মন্দির উৎসর্গ করে উদ্বোধক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন শান্তি সম্প্রীতি সংহতি ও বিশ্ব ধর্মের অধিষ্ঠান হিসেবে এই দেবালয় অধিষ্ঠিত জগন্নাথ, যিনি জগতের নাথ। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ” এই মন্দির হাজার হাজার বছর ধরে সমুদ্রের তরঙ্গের মত ধর্মীয় তরঙ্গের উন্মাদনা তৈরি করবে যা অপূর্ব স্থান হিসেবে গোটা বিশ্বের
মানুষ যাবতীয় সুচিন্তক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাকে আবাহন করবেন।” অক্ষয় তৃতীয়ার শুভলগ্নে বুধবার ঠিক দুপুর ৩ টে ১২ মিনিট নাগাদ জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের উদ্বোধনী পর্ব সাঙ্গ হলে ইসকনের হাতে মন্দিরের পরিচালন ভার তুলে দেওয়া হয়। নিত্য পূজো থেকেই ধর্মীয় রীতিনীতি ও আচার-আচরণ সবকিছুই পালন করবে ইসকন। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্বোধনী পর্বে তার সঙ্গে ছিলেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত রাজেশ দয়িতাপতি এবং ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস। রাধারমণ এবং তার দলের উপরেই এই জগন্নাথ মন্দিরের যাবতীয় পূজা অর্চনার দায়িত্ব সঁপে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রায় তিন বছর ধরে দীঘার সমুদ্র সৈকতে এই জগন্নাথ মন্দির তৈরীর দায়িত্ব পালন করেছে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা হিডকো। মন্দির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং হিডকোর সমস্ত কর্মীকে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। চৈতন্যদ্বার সহ এই মন্দিরে পুরীর জগন্নাথ ধামের আদলে অষ্টদ্বার তৈরি করা হয়েছে এই জগন্নাথ মন্দিরেও। রত্ন বেদীর উপর পাথরের জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার মূর্তি থাকছে। পাশাপাশি দারু মূর্তি সহ নিম কাঠের জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা থাকছেন এই মন্দিরে। এই তিন বিগ্রহের যে দারুন মূর্তি তৈরি করা হয়েছে সেই মূর্তি প্রতিদিন পুজো করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রতিটি রাজ্য বাসীর ঘরে ঘরে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের বিগ্রহের ছবি এবং প্রসাদ পাঠানো হবে। তার কথায় রাজ্যের ভক্ত প্রাণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই মন্দিরের অপেক্ষায় ছিলেন। আজ তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা ও কামনার পূরণ হল। আজ উদ্বোধনী আর পর্বের শেষে শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই জ্ঞানীগুণী শিল্পীরা দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে উপস্থিত রয়েছেন। আগামীকাল নৃত্য পুজোর পর দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।