২০ জুন, এই দিনটা ছিল আমির খানের বহুপ্রতীক্ষিত কামব্যাকের দিন। ‘তারে জমিন পর’-এর সিক্যুয়েল ‘সিতারে জমিন পর’ নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। তবে ট্রেলার মুক্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বদলে গেল ছবির হাওয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড করতে শুরু করল #BoycottSitaareZameenPar। একদিকে আমির ভক্তদের উচ্ছ্বাস, অন্যদিকে এক শ্রেণির নেটিজেনদের ক্ষোভ, এই দ্বৈত সুরেই এখন মুখর দেশ।
আমিরের বিপাকে পড়ার নেপথ্যে আবারও উঠে এল ২০২০ সালের সেই বিতর্কিত সফর। ‘লাল সিং চাড্ডা’র শুটিংয়ের জন্য তুরস্কে গিয়েছিলেন আমির। সেখানেই দেখা হয়েছিল তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমাইন এর্ডোয়ানের সঙ্গে। সেই সাক্ষাতের ছবি ভাইরাল হয়েছিল, আর সেই ঘনিষ্ঠতা নিয়েই উঠেছিল প্রশ্ন। একটা যুদ্ধমুখর সময়ে, ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতাকারী দেশের নেতার স্ত্রীর সঙ্গে এমন বন্ধুত্বের কী মানে?
যখন গোটা দেশ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আবেগে ভাসছে, পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ তুরস্কের সঙ্গে আমিরের সেই সম্পর্ক ফের উসকে দিল বিতর্ক। এই আবহেই আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ হয়ে উঠেছে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যদিও ছবিটি মূলত একটি স্পোর্টস ড্রামা, যেখানে মিশে রয়েছে আবেগ, কৌতুক ও মানবিক বার্তা যা বরাবরই আমির খানের সিনেমার ইউএসপি।
এই ছবিতে আমির নিজেই জানিয়েছেন, তিনি মুখ্য চরিত্রে নন, বরং একটি ছোট ভূমিকায় রয়েছেন। তবে অনেকের মতে, মুখ্য ভূমিকায় না থাকলেও, ছবিটি আমিরের প্রজেক্ট এবং সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে বিতর্কের আঁচ। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘তারে জমিন পর’ ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক মাইলফলক হয়ে আছে। তার গল্প, অভিনয় ও আবেগ আজও দর্শকদের মনে গেঁথে আছে। সেই ছবির সিক্যুয়েল মানেই এক বিশেষ আবেগ। অথচ সেই আবেগেই এবার জল ঢালছে রাজনীতি ও পুরনো বিতর্ক।
চলচ্চিত্র একান্তই শিল্পের বিষয়, তবে কখনও কখনও শিল্পীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ও অতীত সম্পর্ক হয়ে ওঠে বড় বাধা। ‘সিতারে জমিন পর’-এর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা সময়ই বলবে। তবে এখনই এটা বলা যায়, আমিরের প্রত্যাবর্তন, যেমন আশার আলো, তেমনি বিতর্কের আগুন।