দফায় দফায় ফ্ল্যাগ মিটিং, লাগাতার বৈঠক—সব কিছুর পরও অনিশ্চয়তায় কেটেছে রজনী সাউয়ের প্রতিটি দিন। একটাই প্রার্থনা, কবে পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হবেন তাঁর স্বামী, বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ?
কিছুদিন আগেই পাঠানকোটে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসেছিলেন রিষড়ায়, বিএসএফের আশ্বাস বুকে বেঁধে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
অবশেষে এল সেই বহু প্রতীক্ষিত খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস। ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির পর প্রায় তিনদিনের মাথায় জানানো হয়—দেশে ফিরেছেন বাংলার সাহসী জওয়ান পূর্ণম সাউ।
সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ রজনীর ফোনে আসে খবর। বিএসএফ কর্তৃপক্ষ জানান, পূর্ণম সাউ ভারতে ফিরেছেন। এরপর ভিডিয়ো কলে স্বামীর সঙ্গে কথা হয় রজনীর।
তিনি বলেন, “ও বলল—অপেক্ষা করো, তিনটেয় আবার ফোন করছি। কিছুটা দুর্বল, তবে শারীরিকভাবে ঠিক আছে।”
স্বামীর মুক্তিতে আবেগে ভেসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেন রজনী। বলেন, “আমাদের উপর সরকার আছে, মোদীজি আছেন, তাই সবই সম্ভব হয়েছে। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে যাঁরা স্বামী হারিয়েছেন তাঁদের হয়ে বদলা নিয়েছেন। আর এবার, আমার সিঁদুর রক্ষা করেছেন। তাঁকে হৃদয়ের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাই।”
কৃতজ্ঞতা জানান বিএসএফ কর্তৃপক্ষকেও। বলেন, “ওঁরা আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। সবসময় আশ্বাস দিয়েছেন, স্বামী ঠিক আছে এবং ফিরে আসবে।”
দেশবাসীকেও ধন্যবাদ জানিয়ে রজনী বলেন, “সবার সাপোর্ট পেয়েছি। গোটা দেশ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। সকলকে করজোড়ে ধন্যবাদ। আপনাদের জন্যই আজ আমার স্বামী ভারতীয় মাটিতে ফিরেছেন।”
পূর্ণম সাউয়ের ঘরে ফেরার খবরে স্বস্তি, আনন্দ আর আবেগে ভেসেছে রিষড়া। এক নারীর অপেক্ষা শেষ হল, আর এক সৈনিক ফিরে এল দেশের কোলে—জয়ের সঙ্গে, সিঁদুর রক্ষা করে।
