নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়—টেস্ট এবং টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরেও কি বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা বিসিসিআই-এর গ্রেড A+ চুক্তিতে থাকবেন? অবশেষে এই নিয়ে মুখ খুললেন বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া, যা ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনা।
সম্প্রতি ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেবজিৎ সাইকিয়া নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বিরাট ও রোহিতের গ্রেড A+ চুক্তিতে কোনও পরিবর্তন আসছে না। টেস্ট ও টি২০ ফরম্যাট থেকে অবসর নিলেও, তাঁরা এখনও ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তাঁদের সেই অনুযায়ী সম্মান ও সুবিধা দেওয়াই স্বাভাবিক বলে মনে করে বোর্ড।
২০২৪-২৫ মরশুমের জন্য বিসিসিআই-এর প্লেয়ার রিটেইনারশিপ তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল এপ্রিল মাসে, যেখানে রোহিত ও বিরাটকে রাখা হয় গ্রেড A+ তালিকায়—যেখানে আরও ছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা। এই চুক্তির আওতায় ক্রিকেটাররা বছরে ৭ কোটি টাকা করে পান। যদিও টেস্ট ও টি২০ থেকে তাঁরা এখন অবসরপ্রাপ্ত, তবুও গত আট মাসে তাঁরা যথেষ্ট আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, যা তাঁদের বর্তমান চুক্তি ধরে রাখার পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করছে বোর্ড।
অক্টোবর ২০২৪ থেকে শুরু হওয়া রিটেইনারশিপ চক্রে রোহিত খেলেছেন ৬টি টেস্ট ও ৮টি ওয়ানডে, এবং বিরাট খেলেছেন ৮টি টেস্ট ও ৭টি ওয়ানডে ম্যাচ। যদিও কেউই টি২০ ম্যাচ খেলেননি, তাঁদের পারফরম্যান্স এবং উপস্থিতি বোর্ডের দৃষ্টিতে এখনও প্রাসঙ্গিক।
বিরাট কোহলি চলতি বছর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের ঠিক আগে অবসরের ঘোষণা দিয়ে ১৪ বছরের টেস্ট কেরিয়ারের পরিসমাপ্তি টানেন। ১২৩টি টেস্টে ৯,২৩০ রান করে, তিনি ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ টেস্ট রান সংগ্রাহক হিসেবে কেরিয়ার শেষ করেছেন। রোহিত শর্মা অবসর নেন ৭ মে, ৬৭টি টেস্ট খেলে ১১ বছরে ৪,৩০১ রান করে, ১৬তম স্থানে রয়েছেন সর্বাধিক রান সংগ্রাহকদের তালিকায়।
টি২০ ক্রিকেট থেকেও তাঁরা অবসর ঘোষণা করেন ২০২৪ সালের বিশ্বকাপ শেষে। এই ফরম্যাটেও তাঁদের অবদান ছিল অসামান্য—বিরাট খেলেছেন ১২৫টি ম্যাচে ৪,১৮৮ রান করে, যেখানে রোহিত শীর্ষে, ১৫১ ম্যাচে ৪,২৩১ রান নিয়ে।
এই প্রেক্ষিতে বোর্ডের সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। অবসর নিলেও তাঁদের দীর্ঘ অবদান, মাঠে উপস্থিতি, নেতৃত্বের দক্ষতা এবং এখনও দলের প্রতি প্রতিশ্রুতি—সবকিছু মিলিয়ে বোর্ড তাঁদের A+ গ্রেড ধরে রেখে একপ্রকার সম্মান জানাল। এটা শুধু তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা নয়, বরং ভবিষ্যতের তরুণদের জন্যও একটা বার্তা—দেশের প্রতি নিষ্ঠা ও অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়।