স্টেজ পারফর্ম করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় জাপানি গার্ল গ্রুপ এক্সজি-এর সদস্য চিসা। তারপর অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে হুইলচেয়ারে করে ম্যানেজার ও স্টাফদের সাহায্যে মঞ্চের পেছন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই মুহূর্তের ভিডিয়ো গ্রুপের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ডকুমেন্টারি সিরিজ এক্সট্রা এক্সট্রা-এর অংশ হিসেবে সম্প্রচারিত হয়েছে। তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিও। ভিডিয়ো দেখে উৎকণ্ঠায় ভক্তরা। পপ শিল্পে প্রচলিত এহেন নির্দয় ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকেই।
গ্রুপটির প্রথম ওয়ার্ল্ড ট্যুর ‘দ্যা ফার্স্ট হাউল’-এ এখন এক্সজি সারা বিশ্বের ৩০টিরও বেশি স্থানে পারফর্ম করছে। সেই সফরের অভিজ্ঞতা নিয়েই ডকুমেন্টারিতে বিভিন্ন মুহূর্ত তুলে ধরা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ৪০ সেকেন্ডের একটি ক্লিপে দেখা যায়, চিসা অসুস্থ অবস্থায় বসে রয়েছেন। তাঁকে খাওয়ানো হচ্ছে, ফিভার প্যাচ লাগানো হয়েছে। সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে, শারীরিকভাবে তিনি অত্যন্ত দুর্বল ছিলেন। তবুও তিনি নিজেই মঞ্চে পারফর্ম করার সিদ্ধান্ত নেন। পারফরম্যান্স শেষে মঞ্চের পেছনে যাওয়ার পরই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
চিসা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অবস্থার আপডেট দিয়ে লেখেন, “এক্সট্রা এক্সট্রা” দেখে যদি কেউ চিন্তিত হয়ে থাকেন, আমি দুঃখিত। আমি সেই মুহূর্তের সবটা মনে করতে পারছি না! ভিডিয়োটি দেখে আমিও অবাক হয়েছি, নিশ্চয়ই আলফাজ আরও বেশি চমকে গিয়েছে। আমি এখন ভালো আছি, তাই দয়া করে চিন্তা করবেন না।” তিনি আরও বলেন, “এই ওয়ার্ল্ড ট্যুর আমাকে শারীরিকভাবে অসুস্থ করে দিয়েছে। জীবনে প্রথমবার নিজের শরীরকে পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছিলাম।”
ভিডিয়ো প্রকাশ পাওয়ার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, একজন শিল্পী এমন অসুস্থ অবস্থায় থাকার পরও কিভাবে তাঁকে পারফর্ম করতে দেওয়া হলো? কেনই সেই মর্মান্তিক মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে প্রকাশ করা হলো? এক ইউজার মন্তব্য করেন, “একজন শিল্পীর সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া কোনো বিরাট কিছু নয়, বরং এটি নির্মমতার প্রমাণ।” আরও একজন লেখেন, “চিসার অনুমতি ছাড়া ওই ভিডিয়ো ধারণ ও প্রকাশ একেবারেই অনুচিত। ওনার চোখে জল ছিল, জ্বর ছিল, আর সেটাই ক্যামেরাবন্দি করা হয়”।
এই ঘটনার পর কে-পপ ইন্ডাস্ট্রির প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি নিয়ে আবারও বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে। অনেকেই বলছেন, একজন শিল্পীকে কি সুস্থ থাকা থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে পারফর্ম করা? শিল্পীদের মানবিকতা ও মর্যাদা কি হারিয়ে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই সংগীত ইন্ডাস্ট্রির চাকচিক্যের আড়ালে?