হরিয়ানার ফরিদাবাদে শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের হাতে খুন গৃহবধূ। স্রেফ তাই নয়, মৃতদেহ লোপাট করতে বাড়ির বাইরেই ১০ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল দেহ। গত এপ্রিল মাস থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তনু সিং নামে বছর চব্বিশের ওই মহিলা। তদন্তে নেমে অবশেষে আড়াই মাস পর চলতি সপ্তাহে ফরিদাবাদের রোশন নগর এলাকা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মাত্র দুই বছর আগে রোশন নগরের নিবাসী অরুণ সিংয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তনুর। মৃতার বাপেরবাড়ির তরফে অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে পণের দাবিতে নির্মম অত্যাচার চালানো হত তনুর উপর। বাপেরবাড়ির সঙ্গে ফোনে কথা পর্যন্ত বলতে দেওয়া হত না। পুলিশ জানায়, গত ২৩ এপ্রিল অরুণদের বাড়ির পাশেই ১০ ফুট গভীর গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। প্রতিবেশীরা কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, নিকাশির কাজের জন্য গর্ত খোঁড়া হয়েছে। পরে প্লাস্টিকের আস্তরণ দিয়ে গর্ত চাপাও দিয়ে দেয় তারা।
গর্ত খোঁড়ার দু’দিন পর ২৫ এপ্রিল মৃতার শ্বশুর ভূপ সিং স্থানীয় পাল্লা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। বাড়ির বউ বাজারে গিয়ে আর ফেরেনি বলে ডায়েরিতে লেখেন তিনি। অপরাধ ঢাকা দিতে পুলিশকে একের পর এক মিথ্যে কথা বলা হয় তনুর শ্বশুরবাড়ির তরফে। তনুর মানসিক সমস্যা ছিল বলেও পুলিশকে জানায় তাঁর শ্বশুর।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পরিবারের কথায় অসঙ্গতি পায় পুলিশ। ম্যারাথন জেরায় অবশেষে তনুকে খুনের কথা কবুল করে নেন ভূপ। ২১ এপ্রিলের রাতে খুনের ঘটনা ও ২৩ এপ্রিল তনুকে মাটি চাপা দেওয়ার ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করে নেন শ্বশুর ভূপ সিং। পুলিশ মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধার করে। পরনের শাড়ি দেখে মহিলাকে শনাক্ত করা হয়। এসিপি রাজেশ কুমার লোচন জানান, পণের দাবিতে খুন বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শ্বশুর ভূপ সিং, তাঁর স্ত্রী তথা মৃতার শাশুড়ি সনিয়া, মৃতার স্বামী অরুণ ও ননদ কাজলের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে ভূপ ও অরুণকে হেফাজতে নিলেও সনিয়া ও কাজল পলাতক বলেই জানা গিয়েছে।