বঙ্গ বিজেপির সংগঠন যেন এখন এক বিস্ফোরণের মুখে দাঁড়ানো পাথরঘর। বাইরের মুখে ‘শৃঙ্খলা’, কিন্তু ভেতরে গমগমে চোরা চাপা আগুন, নেতৃত্ব বদলের এই মুহূর্তেই প্রকাশ পাচ্ছে বিজেপির অন্তরের খাঁজ!
দিলীপ ঘোষের পর দিল্লির হঠাৎ নির্দেশে বসানো হয়েছিল সুকান্ত মজুমদারকে। এক ছাত্রমুখী, অধ্যাপকমনস্ক নেতা। কিন্তু সংগঠন কি চায় অধ্যাপক নাকি যোদ্ধা? প্রশ্নটা থেকে গেছে শুরু থেকেই। আজ সেই অধ্যাপক সভাপতি হয়তো চুপিচুপি মঞ্চ ছাড়ছেন, আর দিল্লি নতুন খেলোয়াড় নামাচ্ছে ময়দানে, বলে দিচ্ছে, বঙ্গ বিজেপিতে গদি বদলের লড়াইটা ঠিক ‘প্রতিযোগিতা’ নয়, এটা ‘পরিকল্পিত রদবদল’।
আজ বুধবার মনোনয়নের দিন। মনোনয়নের আগে থেকেই গোটা প্রক্রিয়া সাজানো! বিকেল ৬টার মধ্যেই তালিকা তৈরি, কারা থাকবেন দৌড়ে আর কারা শুধুই দর্শক। অতীত বলছে, এই ‘নির্বাচন’ আসলে ‘মনোনয়নমূলক নিয়োগ’।
শোনা যাচ্ছে, দিল্লির ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা শমীক ভট্টাচার্য হঠাৎই নাড্ডার বাড়িতে হাজির। কলকাতা বলছে, দিল্লির দাক্ষিণ্যে ভাগ্যবান, আর নিচুতলার কর্মীরা বলছেন, আমরা কেবল দেখেই যাই, কিছু বলার অধিকার নেই!
এই দলে এখন একটাই মানচিত্র, দিল্লি ঠিক করবে, বাংলা মানবে! অথচ বাংলা, নিজের রাজনৈতিক গন্ধে তৈরি মাটি! এখানে রিমোট কন্ট্রোল নেতৃত্বে দল চলতে পারে না। তাই প্রশ্ন উঠছে গোপনে, এই যে একের পর এক দিল্লির প্রিয়পাত্রদের বসানো হচ্ছে, তাতে কি বিজেপি সত্যিই বাংলা বুঝতে পারছে? নাকি আবারও পরের ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে নিজেরাই?
যে দল একদিন ‘সংগঠন’ আর ‘লড়াই’-এর নাম ছিল, আজ সেখানে মঞ্চেই কেবল নাটক চলছে, অভিনেতা ঠিক করে দেওয়া, সংলাপও লিখে দেওয়া! চমক আছে, চ্যালেঞ্জ আছে, শুধু বাস্তব অভিজ্ঞতার ছাপটা ক্রমে ঝাপসা।
আগামীকাল সায়েন্স সিটিতে নাম ঘোষিত হবে। কিন্তু আসল খেলা আজই শেষ। একদিকে নতুন মুখের আগমনের প্রতীক্ষা, অন্যদিকে পুরনো ক্ষোভের ছায়া। বঙ্গ বিজেপির এই অধ্যায় যেন একটা রাজনীতির থ্রিলার! যেখানে চরিত্র সব জানা, কিন্তু শেষ দৃশ্য এখনও অজানা।