কসবা আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সামনে আসছে একের পর এক কেলেঙ্কারি। এমনকী অন্যান্য কলেজগুলিতেও একের পর এক কীর্তির ভিডিও প্রকাশ্যে। যা নিয়ে রীতিমত অস্বস্তিতে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এর মধ্যেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর। তাঁর দাবি, কসবা ল কলেজের মতো প্রতিটি কলেজেই ‘দাদা’রা সক্রিয়। বিরোধী দলনেতার কথায়, তাঁরা সবাই ‘ভাইপো গ্যাং’-এর সক্রিয় সদস্য। শুধু তাই নয়, শাসকদলের ছত্রছায়ায় থেকে মেয়েদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার এবং টাকা তোলার সঙ্গেও যুক্ত বলেও দাবি।
এ হেন অভিযোগের পাশাপাশি এ দিন একটি তালিকাও প্রকাশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে ৫০ জনের নাম আছে। একই সঙ্গে একটি স্ক্রিনে বেশ কিছু ছবিও দেখান। তা দেখিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, সবাই ‘ভাইপো গ্যাং’-এর সক্রিয় সদস্য। রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এমনকী কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিতের মতোই মহিলাদের সঙ্গে নির্যাতনে যুক্ত। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে দাবি শুভেন্দু অধিকারীর।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ শানান। বলেন, ‘এই সমস্ত ছাত্ররা ভাইপোর হয়ে টাকা তোলে’। একই সঙ্গে কলেজে কলেজে যে তৃণমূলের লোকজন চাকরি করছে তাও তুলে ধরেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, সুযোগ পাচ্ছে না যোগ্যরা। কিন্তু বিভিন্ন কলেজে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিরোধী দলনেতার প্রকাশ্যে আনা ছবিতে তৃণমূল এবং টিএমসিপির কোন কোন নেতা-নেত্রী কোন কলেজে চাকরি করছেন তা তুলে ধরা হয়। তবে এদিন ৫০ জনের নামের তালিকা দিলেও আগামিদিনে আরও নাম প্রকাশের হুঁশিয়ারি দেন। বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘৫০ জনের নাম প্রাথমিকভাবে প্রকাশ করলাম’। ইচ্ছা করলে আরও ১০০০ জনের তালিকাও যে দিতে পারেন তা এদিন সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট জানান শুভেন্দু।
ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিজেপি নেতার কথায়, সুরক্ষা বলে কিছু নেই। প্রত্যেক কলেজেই মনোজিতের মতো একজন রয়েছে। তাঁর কথায়, এরা সবাই ভাইপোর লোক হওয়াতে প্রশাসন সব জেনে চুপ করে বসে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে আদালতের সম্প্রতি একটি রায়ের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, কলেজের ইউনিয়ন রুমগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। নানারকম কার্যকলাপ এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই আদালতকে তা বন্ধ করে দিতে বলতে হয়। বলে রাখা প্রয়োজন, রাজ্যের সমস্ত কলেজের ইউনিয়ন রুমগুলি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে উল্লেখ করেই রাজ্য প্রশাসনকে তোপ দাগেন শুভেন্দু।
পালটা বিরোধী দলনেতাকে জবাব দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এলাকার কলেজে নিজের লোক বসিয়েছিল। তখন কোনও সমস্যা হয়নি বলে তোপ কুণালের। অন্যদিকে ‘ভাইপো গ্যাং’ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, সব কলেজেই অভিষেকের অনুগামী আছে। তাঁকে দেখে আকৃষ্ট হচ্ছে। বাম বিজেপির কেউ নেই বলেও মন্তব্য প্রাক্তন সাংসদের।