বলা হয় তিনি বাংলা সিনেমার ‘ইন্ডাস্ট্রি’। অনুরাগী থেকে সহকর্মী, সকলেই তাঁকে ভালোবেসে ডাকেন বুম্বা দা নামে। তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, এই প্রথম পা রাখছেন হিন্দি টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে, প্রযোজক হিসেবে। সম্প্রতি ‘স্ক্রিন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, কী ভাবে তিনি সৃজনশীলতা ও অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখেন, কেন তিনি নিজেকে ‘প্রযোজক বন্ধু’ অভিনেতা মনে করেন, এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন। আর তাঁর ডাক নাম? সেই নিয়েও কথা বললেন তিনি।
ইন্ডাস্ট্রিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ‘বুম্বা দা’ নামেই পরিচিত। অভিনেতার কথায় এই নাম তাঁর সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে মুম্বইতেও। ‘জুবিলি’ বা ‘খাকি’-র মতো প্রজেক্টে কাজ করার সময় মনোজ বাজপেয়ী থেকে রাজকুমার রাও, সকলেই তাঁকে স্বাভাবিক ছন্দেই ‘বুম্বা দা’ নামেই ডাকতেন। এমনকী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেকোনও অফিসিয়াল মিটিংয়েও তাঁকে বুম্বা বলেই ডেকে থাকেন। অভিনেতার কাছে এটা শুধু একটা ডাকনাম নয়, তাঁদের সঙ্গে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলতে থাকা একটা সম্পর্ক। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি কোনওদিন এই নামটা বদলাইনি। আমার অনুরাগীরা, শুভাকাঙ্খীরা আমাকে বুম্বা দা বানিয়েছেন এবং সেটা আমার জন্য আশীর্বাদের মতো।’
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
প্রায় চার দশক ধরে বিস্তৃত তাঁর অভিনয় জীবন কীভাবে প্রসেনজিৎকে প্রযোজকদের বুঝতে সাহায্য করেছে? বুম্বা দার কথায় যখন তিনি বা শাহরুখ খান, সলমন খান, অজয় দেবগণের মতো তাঁর সমসাময়িক অভিনেতারা কাজ শুরু করেছিলেন, তখন ফিল্ম অর্থনীতি একেবারে অন্যরকম ছিল। প্রযোজকেরা যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হন, সেই সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং বুঝে চলা একজন অভিনেতার জন্য জরুরি, মত প্রসেনজিতের। একটি প্রোডাকশনের ক্রিয়েটিভ ও আর্থিক, দুই দিকই যিনি বুঝে চলতে পারেন তিনিই ‘প্রযোজক বান্ধব’ অভিনেতা। এমন একজন মানুষ যে ওই প্রোজেক্টের সাফল্য নিশ্চিত করতে পারবে, যাতে তাঁর ফিল্মসে প্রযোজক ভরসা করে টাকা ঢালতে পারেন।
আরও পড়ুন
দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার, ফলে এতদিনের অভিজ্ঞতায় তিনি যে কোনও ছবি তৈরির প্রোডাকশনের সঙ্গেও খুব ভালোভাবে মিশে যেতে পারেন। কলকাতায় তাঁর ‘প্ল্যানিং’ করার ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত সকলেই। তিনি জানান যে একটা স্ক্রিপ্ট মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ভেঙে তার থেকে শ্যুটিং প্ল্যান দিয়ে দিতে পারেন। কর্মজীবনের শুরুতেই কঠিন সময় দেখেছেন অভিনেতা। ফলে তিনি মনে করেন সময় নষ্ট না করে দক্ষভাবে কাজ করাই সাফল্যের চাবিকাঠি। তবে সবশেষে অভিনেতা নিশ্চিত করেন যে অভিনয়ই তাঁর আসল স্থান। প্রযোজনায় নিজেকে বিস্তৃত করলেও জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত নিজেকে একজন অভিনেতা হিসেবেই দেখতে চান।
