বৃহস্পতিবার থেকে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামছে টিম ইন্ডিয়া। এজবাস্টনে ব্যাটে বলে ঐতিহাসিক পারফরম্যান্সের পর টগবগ করে ফুটছে শুভমন গিলের দল। আর এ বার ‘হোম অব ক্রিকেটে’ জশপ্রীত বুমরাহ্ও ফিরে আসছেন দলে। সব মিলিয়ে তৃতীয় টেস্টে নামার আগে ভারতীয় দলকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ রীতিমত সপ্তম স্বর্গে। যদিও শুধু বুমরাহ্ ফিরে আসার কারণেই যে ভারতের বোলিং আরও ধারালো হতে চলেছে তা কিন্তু নয়। একে তো ম্যাচের একদিন আগে লর্ডসের সারফেসের যে ছবি সামনে এসেছে তাতে যথেষ্ট পরিমাণেই ঘাস দেখা গিয়েছে। তার ওপরে এই ক্ষেত্রে বাড়তি অনুঘটকের ভূমিকা নিতে পারে লর্ডসের বিখ্যাত ‘স্লোপ’ও।
‘ক্রিকেটের মক্কা’ নামে সুপরিচিত ঐতিহ্যবাহী লর্ডস স্টেডিয়ামের অন্যতম বিশেষত্বই হল, এখানকার স্লোপ। অর্থাৎ গোদা বাংলায় যাকে বলে, ঢাল। মাঠটির উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্তে ২.৫ মিটার হ্রাসের সঙ্গে এমনই একটি ঢাল বিস্তৃত। অর্থাৎ সহজ কথায়, ভৌগোলিকভাবে মাঠটির ভূমিরূপ উত্তর থেকে দক্ষিণে কিছুটা হেলানো। যার প্রভাব খুব সঙ্গত কারণেই পড়ে লর্ডসের সারফেসের ওপরও। প্যাভিলিয়ন এন্ড থেকে সিম বোলাররা এবং নার্সারি এন্ড থেকে সুইং বোলাররা এই স্লোপ বা ঢালের কারণে একটি বাড়তি অ্যাডভান্টেজ পেয়ে থাকেন উইকেট থেকে।
টেস্টের এক নম্বর বোলার ফিরে আসায় গ্রিন টপে এই স্লোপ যে ভারতের জন্য একটি অন্যতম বড় অস্ত্রে পরিণত হতে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ বুমরাহ্ এমন একজন জোরে বোলার, যিনি সিম এবং সুইং দুই বিভাগেই সমান দক্ষ। ফলে উইকেটের দুই প্রান্ত থেকেই আক্রমণের সুযোগটা থাকছে তাঁর। সুযোগ থাকছে এজবাস্টনের দুই নায়ক মহম্মদ সিরাজ এবং আকাশ দীপের জন্যও। বৈচিত্রের অভাব নেই এই দুয়ের বোলিংয়েও। তা ছাড়া গত টেস্টে কার্যত ফ্ল্যাট উইকেটে দুরন্ত বোলিং করে দুজনেই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। সেখানে এ বার তাঁরা সঙ্গে পাচ্ছেন লর্ডসের স্লোপকে। আর এর সঙ্গে গ্রিন টপ হলে তা তো একেবারে চেরি অন টপ।
আরও পড়ুন
এ ছাড়া লর্ডসের স্লোপ নিয়ে আরও যে কথাটি না বললেই নয়। স্লোপের গ্র্যাডিয়েন্ট অর্থাৎ নতি বাঁহাতি ব্যাটারদের তুলনায় ডানহাতিদেরই বেশি প্রভাবিত করে। এ দিকে চলতি সিরিজের ইংল্যান্ড দলে সিংহভাগ ব্যাটারই ডানহাতি। সুতরাং ভারতীয়রা এখানেও একটি বাড়তি অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যেতেই পারে। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে লর্ডসের সারফেস যদি সত্যি সত্যিই একটি ঘাসের গালিচা হয় তা হলে চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়, অ্যাডভান্টেজ ইন্ডিয়া। আর যদি শেষপর্যন্ত পিচে ঘাস না থাকে। যদি শেষমেশ সেই ‘বাজবল’সুলভ উইকেটই দেখা যায়, তা হলেও বুমরাহ্’র সঙ্গে আকাশ এবং সিরাজ নামলে অ্যাডভান্টেজ ইন্ডিয়া।