ব্রিটিশ দল ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে হারিয়ে ১৯১১ সালের ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ডজয় উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে ‘মোহনবাগান দিবস’। দিনটা সবুজ-মেরুন সমর্থকদের কাছে অত্যন্ত আবেগের। মোহনবাগান দিবসে ঐতিহ্যশালী ক্লাবটিকে একটি শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে এ দিন সকাল থেকেই একাধিক কর্মসূচি পালিত হচ্ছে গোষ্ঠ পাল সরণিতে। সকাল নটা নাগাদ মোহনবাগান লেন থেকে মশাল মিছিলের মাধ্যমে শুরু হয় এই কর্মসূচি।
প্রথমে অমর একাদশের উদ্দেশ্যে মাল্যদান করেন মোহনবাগান ক্লাবের সচিব সৃঞ্জয় বোস, সভাপতি দেবাশিস দত্ত সহ আরও বিশিষ্টজনেরা। এরপর শুরু হয় পদযাত্রা। শহর ঘুরে সেই যাত্রা এসে শেষ হয় মোহনবাগান ক্লাব চত্বরে। এরপর দুপুরেও রয়েছে একাধিক অনুষ্ঠান। অমর একাদশকে পুনরায় মাল্যদান করার পর হবে পতাকা উত্তোলন। সেইসঙ্গে ক্লাবের মাঠে আয়োজিত হবে প্রাক্তন ফুটবলারদের নিয়ে একটি প্রীতি ম্যাচ।
যদিও দিনের মূল অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। এ বছর ‘মোহনবাগান রত্নে’ ভূষিত হতে চলেছেন প্রাক্তন সভাপতি স্বপন সাধন বোস ওরফে টুটু বোস। তাঁকে সম্মানিত করার পাশাপাশি পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বাকি প্রাপকদের হাতেও। এ বছর সেরা ফরোয়ার্ডের পুরস্কার পাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা জেমি ম্যাকলারেন। এ ছাড়া সেরা উদীয়মান তারকা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে দীপেন্দু বিশ্বাসকে। অন্যদিকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার দেওয়া হবে ক্রিকেটার রাজু মুখার্জিকে।
এই সমস্ত পুরস্কারের পাশাপাশি দেওয়া হবে সেরা সমর্থক, সেরা ক্রীড়া সাংবাদিক, সেরা রেফারি, সেরা ক্রীড়া সংগঠক ইত্যাদি পুরস্কারও। গত মরশুমে জামশেদপুরে হেনস্তার শিকার হওয়া রিপন মণ্ডলকে বেছে নেওয়া হয়েছে সেরা সমর্থক হিসেবে। মরণোত্তর সেরা ক্রীড়া সাংবাদিকের পুরস্কার দেওয়া হবে অরুণ সেনগুপ্ত এবং মানস ভট্টাচার্যকে। সেরা রেফারি মিলন দত্ত। সেরা ক্রীড়া সংগঠক অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সচিব অমল কুমার মৈত্র। এ ছাড়া সেরা হকি খেলোয়াড় হিসেবে অর্জুন শর্মা এবং সেরা ক্রিকেটার হিসেবে রণজ্যোৎ সিং খায়রা পুরস্কার পাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সঙ্গীতানুষ্ঠানও। যেখানে উপস্থিত থাকতে চলেছেন সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ এবং ইমন চক্রবর্তী।
এ দিকে মোহনবাগান দিবস নিয়ে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রীও। ক্লাবটিকে পাঠানো শুভেচ্ছাপত্রে মমতা লেখেন, “আজ ২৯ জুলাই। মোহনবাগান দিবস নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উদযাপন করা হবে জেনে খুবই আনন্দিত। কেবল মোহনবাগানের ইতিহাসেই নয়, ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসেও দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম।” এরই সঙ্গে যোগ করেছেন, “১৯১১ সালের এই দিনেই মোহনবাগান প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে ব্রিটিশ দলকে হারিয়ে ঐতিহ্যশালী আইএফএ শিল্ড জিতেছিল। যা খেলাধুলার ঊর্ধ্বে গিয়ে জাতীয় গর্বের প্রতীক হয়ে ওঠে। এটি নিছকই কেবল জয় নয়, বরং এক অপরিসীম গৌরবের মুহূর্ত ছিল। যা লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ে দেশপ্রেমের উচ্ছ্বাস জাগিয়ে তুলেছিল।’