পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা নিয়ে এমনিতেই জমেছে বিতর্কের কালো মেঘ। বৃহস্পতিবার বার্মিংহামে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডসের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার কথা ভারত-পাকিস্তানের। এরপর সেপ্টেম্বরে আসন্ন এশিয়া কাপেও একই গ্রুপে রাখা হয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছে পরিবেশ। আর এ বার সেই উত্তাপের আঁচ আরেকটু বাড়িয়ে দিল আগামী ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক। জানা গিয়েছে, আসন্ন অলিম্পিকের ক্রিকেট ইভেন্টে ভারত খেললেও বাদ পড়তে চলেছে পাকিস্তান।
২২৮ বছর পর অলিম্পিকের মঞ্চে ফিরতে চলেছে ক্রিকেট। এ দিকে অলিম্পিকের ক্রিকেট ইভেন্টে কোন কোন দেশ যোগ্যতা করবে তা এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি আইসিসির তরফে। এমনকী জানানো হয়নি যোগ্যতা অর্জনের মাপকাঠিও। তবে সূত্রের খবর, প্রতিটি মহাদেশ থেকে একটি করে দল অংশ নিতে পারে অলিম্পিকের ৬ দলীয় ক্রিকেট ইভেন্টে। আয়োজক হওয়ার সুবাদে আমেরিকা খেলছেই। অন্যদিকে এশিয়া, ইউরোপ, ওশিয়ানিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা দলগুলি অলিম্পিকে খেলার ছাড়পত্র পাবে।
এতেই বেধেছে বিপত্তি। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকার সুবাদে তিন মহাদেশ থেকে যথাক্রমে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা কোয়ালিফাই করবে। কিন্তু বাদ পড়তে হবে পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডকে। এতে অবশ্য স্বস্তিতেই থাকার কথা ভারতীয় বোর্ড বা কেন্দ্রীয় সরকারের। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর তারা এমনিতেই খেলতে চায় না চিরশত্রুদের বিরুদ্ধে। কিন্তু পাকিস্তান বা নিউজিল্যান্ডের মতো দলের অলিম্পিকে খেলা হবে না। এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
জানা গিয়েছে, এক মহাদেশ এক দল, এই ফর্ম্যাটটিতে সায় রয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিরও। তারাও মহাদেশকেন্দ্রিক নিয়মটিকেই গুরুত্ব দিতে চায়। কিন্তু পাকিস্তান বা নিউজিল্যান্ডের না খেলতে পারার ব্যাপারে অসন্তুষ্ট অনেকেই। যদিও এই দুই দলের জন্য সুযোগ যে একেবারেই নেই তা নয়। এক মহাদেশ এক দল, এই নিয়মানুসারে বাদ পড়ার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের কোনও দলের। কারণ, আমেরিকা মহাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকা ইতিমধ্যেই যোগ্যতা অর্জন করেছে। যেহেতু তারা আয়োজক। কাজেই, ৬ দলীয় টুর্নামেন্ট আরেকটি যে জায়গা ফাঁকা থাকছে, তাতে পাকিস্তান বা নিউজিল্যান্ডের শিকে ছিঁড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিকে শুধু পাকিস্তান কিংবা নিউজিল্যান্ডই নয়। অলিম্পিকের ক্রিকেট ইভেন্টে দেখা যাবে না ইংল্যান্ডকেও। কারণ অলিম্পিকে ইংল্যান্ড অংশগ্রহণ করে না। করে গ্রেট ব্রিটেন। তাই ক্রিকেটের ইভেন্টেও ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সম্মিলিত দল গ্রেট ব্রিটেন নামে অংশ নিতে চলেছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে পাকিস্তানকে নিয়ে। ভারত অবশ্যই চাইবে যাতে পাকিস্তান অলিম্পিকে অংশ নিতে না পারে। এ বার শেষপর্যন্ত কী হয় সেটাই দেখার।