কেরলের প্রবীণদের স্মার্টফোন ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তুলতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ওই রাজ্যের সরকার। সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন ও হোয়াটসঅ্যাপ– এই তিন মাধ্যম সম্পর্কে রাজ্যের সাধারণ মানুষ, বিশেষত বয়স্ক নাগরিকদের ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগের নাম ‘ডিজি কেরলম-সম্পূর্ণ ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রকল্প’, যার লক্ষ্য ডিজিটাল পরিষেবা রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। রাজ্যের স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থা এই প্রকল্পের নেতৃত্বে ছিল।
২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে রাজ্যের ৮৩ লাখ পরিবারে সমীক্ষা চালিয়ে ১.৫ কোটি মানুষকে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে ২১ লাখ মানুষকে ডিজিটাল সাক্ষরতাহীন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যাঁদের অনেকেই ছিলেন ৯০ বছরের বেশি বয়সি।
এই ২১ লাখের মধ্যে ১৫,২২৩ জন প্রবীণ যাঁরা ৯০ বছরের বেশি বয়সি, সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সাজিনা সাথার জানান, “আমরা প্রবীণদের উৎসাহ দিয়েছি যেন তাঁরা স্মার্টফোন ব্যবহারের ভয় কাটিয়ে ওঠেন। আমরা বুঝিয়েছি তাঁরা তাঁদের সন্তান বা আত্মীয়দের সঙ্গে ভিডিও কল করতে পারবেন, পছন্দের অনুষ্ঠান ও গান দেখতে পারবেন। এভাবেই আমরা তাঁদের আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিলাম।”
এমজিএনআরইজিএ-র সুপারভাইজার, ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম, ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস ও নেহরু যুব কেন্দ্র মিলে পরিচালনা করে পুরো কার্যক্রম।
প্রশিক্ষণ চলে দুপুরের বিরতিতে, MGNREGA-র কাজের স্থানে।
যাঁদের ফোন ছিল না, তাঁদের স্বেচ্ছাসেবকদের স্মার্টফোনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রবীণদের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে।
প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু:
•ছবি তোলা ও ভিডিও রেকর্ড করা
•সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি
•হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো
•গুগল সার্চ ব্যবহার
•গ্যাস বুকিং ও অন্যান্য ই-সার্ভিস
•ভুয়ো খবর রুখতে রাজ্য সরকারের ‘সত্যমেব জয়তে’ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে সংবাদ যাচাই
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মূল্যায়ন করা হয়। ৬৫ বছরের কম বয়সিদের জন্য মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক হলেও, বেশিরভাগ ৬৫-এর ঊর্ধ্বরাও সফলভাবে মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তৃতীয় পক্ষের মূল্যায়নও করে রাজ্যের অর্থ ও পরিসংখ্যান বিভাগ। এই প্রকল্পের অনুপ্রেরণা ছিল ২০২২ সালের থিরুভনন্তপুরম জেলার পুল্লমপুরা পঞ্চায়েত, যেখানে ৩,৯০০ ডিজিটালি-অজ্ঞ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। আগামী ২১শে অগাস্ট কেরলকে ভারতের প্রথম ‘ডিজিটালি-স্বাক্ষর রাজ্য’ হিসেবে ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

