সোনা কমস্টারের চেয়ারম্যান সঞ্জয় জে কাপুরের অকালপ্রয়াণের পর পরিবারে তীব্র অশান্তি। সোনা কমস্টারের মালিকানা কার হাতে থাকবে, সেই নিয়ে চলছে জোর দ্বন্দ্ব। সবকিছু ছলচাতুরি করে লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সঞ্জয়ের বর্তমান স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এবার কাপুর পরিবারের পক্ষ নিয়ে সরব হলেন সঞ্জয়ের বোন মন্দিরা কাপুর। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, পরিবারের উপর যে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা একেবারেই অমানবিক। বিশেষ করে তাঁর ৮০ বছর বয়সি মায়ের জন্য এসব সহ্য করা খুবই চাপের।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন লন্ডনে পোলো খেলতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সঞ্জয় কাপুর। তিনি প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকার মবিলিটি টেক কোম্পানি সোনা কমস্টারের প্রধান ছিলেন। প্রথমে জানা গিয়েছিল, তাঁর গলায় মৌমাছি কামড়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পরে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে হার্ট অ্যাটাক উল্লেখ করা হয়।
মন্দিরা কাপুরের অভিযোগ, মৃত্যুর সঠিক তথ্য সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে অল্প অল্প করে জানতে পেরেছেন পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে সোনা কমস্টারের পক্ষ থেকে কাপুর পরিবারের কর্তা সঞ্জয় ও মন্দিরার মা রানি কাপুরকে একটি সিজ অ্যান্ড ডিজিস্ট নোটিস পাঠানো হয়। রানি কাপুরের অভিযোগ, তাঁর পুত্রবধূ প্রিয়া সচদেব কাপুরকে নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার কাগজপত্রে তাঁকে জোরপূর্বক সই করানো হয়েছে।
রানি কাপুর দাবি করেন, তিনি সংস্থার মেজরিটি শেয়ারহোল্ডার। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৯ সালের পর থেকে তাঁর কোনো শেয়ার নেই। এই প্রসঙ্গে মন্দিরা বলেন, “যেভাবে সারা বিশ্ব এখন জানতে পারছে, আমরাও সেভাবেই জানতে পারছি। আমরা খুঁজে দেখলাম, সব কিছু নাকি একটি তথাকথিত ট্রাস্টে স্থানান্তরিত হয়েছে। কীভাবে হলো, আমরা জানি না। আমার বাবা সব কিছু মায়ের নামে রেখে গিয়েছিলেন। বাবা-মা মিলে সোনা কমস্টার গড়ে তুলেছিলেন। এখন মাকে বলা হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই , এটা অবাস্তব।”
তিনি আরও জানান, “আমার মা আজ সব কিছু হারিয়েছেন। স্বামীকে হারিয়েছেন, এখন ছেলেকেও হারালেন। মায়ের জীবনে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। আমার স্বামী-সন্তান আছে, কিন্তু তাঁর আর কিছুই নেই। এই অবস্থায় তাঁকে অপমান করা অন্যায়।”
মন্দির কাপুর বলেন, এই কঠিন সময়ে তাঁদের পরিবার ক্রমাগত আঘাতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, অজানা সব তথ্য জানতে হচ্ছে বাইরের সূত্রে। তাঁর কথায়, “১২ জুন থেকে আমাদের জীবন এক বড় ধাক্কা। যেন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছি, সেখান থেকে আমরা জেগে উঠতে চাই।” সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর থেকে কাপুর পরিবারের উত্তরাধিকার ও মালিকানা নিয়ে গভীর অশান্তি তৈরি হয়েছে। বারবার তা প্রকাশ্যে আসছে। কিন্তু কোনভাবেই সুরাহা হচ্ছে না বলে দাবি পরিবারের।
