ভারতীয় ক্রিকেটে জসপ্রীত বুমরাহ’র উত্থান যেন এক যুগান্তকারী ঘটনা। বর্তমানে বিশ্বের এক নম্বর বোলার যখন প্রথমবার সামনে আসেন, তাঁর অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশন দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল সকলেরই। আসলে বল করার সময় বুমরাহ’র বোলিং আর্মে যে অস্বাভাবিক হাইপার এক্সটেনশন লক্ষ্য করা যায় তা ব্যাটারকে সমস্যায় ফেলার পাশাপাশি চাপ তৈরি করে তাঁর নিজের শরীরের ওপরেও। ফলে বাধ্য হয়েই অন্য একটি পরিকল্পনা করতে হয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্টকে। সম্প্রতি যা ফাঁস করেছেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বোলিং কোচ ভরত অরুণ।
কী সেই পরিকল্পনা?
এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি অরুণ জানিয়েছেন, জাতীয় দলের কোচেদের তরফে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। বুমরাহ সেই সমস্ত পরামর্শগুলি মেনেছিলেন বলেই আজ তিনি বিশ্বসেরা বোলার। এতেই শেষ নয়।
ভরত অরুণ আরও জানিয়েছেন, কোচেদের পরামর্শে নিজের পছন্দের তিনটি খাবারকে ত্যাগও করেছিলেন বুমরাহ। যা তাঁর জন্য মোটেই সহজ ছিল না।
অরুণের কথায়, “সত্যি বলতে, আমরা বুমরাহর অ্যাকশন পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলাম। নতুন অ্যাকশনটি দুর্দান্ত ছিল। কিন্তু গতি কমে গিয়েছিল। বোলিং যদি কার্যকরই না হয় তা হলে শুধু দুর্দান্ত অ্যাকশনে লাভ কী?”
ভারতের প্রাক্তন বোলিং কোচ জানান, এই সঙ্গে তাঁরা স্ট্রেনথ এবং কন্ডিশনিং কোচের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। বলেন, “আমরা বলেছিলাম, বুমরাহ’র অ্যাকশন নিয়ে কথা বলতে চাই না। কারণ এটি নিঃসন্দেহে অনন্য এবং প্রচুর গতি উৎপন্ন করে। কিন্তু এটি তাঁর শরীরকেও চাপের মধ্যে ফেলে।”
এরপরই অরুণ যোগ করেছেন, “আমরা তখন বুমরাহকে ফোন করে বলেছিলাম, ফাস্ট বোলিংয়ের ছাপ ফেলতে হলে তোমার প্রয়োজন সঠিক ডায়েট এবং ব্যায়াম। এর জন্য ত্যাগ স্বীকারও করতে হবে। সত্যি কথা বলতে, বুমরাহ এর পরই বদলে যায়। সে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে শুরু করে। জিমে ঘন্টার পর ঘন্টা শরীরচর্চা করতে থাকে। বিরাট কোহলির মতো সেও নিবেদিতপ্রাণ। বার্গার, পিৎজা, মিল্কশেক তাঁর খুব পছন্দের ছিল। কিন্তু রাতারাতি সেসবকিছু ছেড়ে দিয়েছিল সে। গুজরাটে বসবাসকারী একটি পাঞ্জাবি ঘরের ছেলে। কিন্তু বোলিংয়ের প্রতি বুমরাহ’র ভালোবাসা যে কোনও খাবারের লোভের চেয়েও বেশি।”
এক সময় নিজেকে ফিট রাখতে নিজের পছন্দসই খাবারগুলি ছেড়েছিলেন বিরাট কোহলি। সেই প্রসঙ্গ টেনে ভরত অরুণ বলেন, “বিরাট কোহলির জাতীয় দলে যে ফিটনেস সংস্কৃতি নিয়ে এসেছিল তা নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। জসপ্রীত বুমরাহও এ বিষয়ে কম নয়। বুমরাহ ২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ ক্যাম্পের জন্য এনসিএ’তে এসেছিল। যদিও দলে জায়গা করে নিতে পারেনি। তবে সে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির ৩০ সদস্যের ক্যাম্পে ছিল।”