সম্প্রতি অনলাইন গেমিং বিল আইনে পরিণত হতেই সারা দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে অনলাইন বেটিং অ্যাপগুলি। এরপর ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর হিসেবে ড্রিম ইলেভেন (Dream 11) এর সরে যাওয়া ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা। যদিও সংস্থাটি অন্য একটি মডেল নিয়ে ফিরে আসার জন্য কাজ করছে। তবে নতুন আইনের জেরে বেশিরভাগ স্পনসরশিপ চুক্তিই বাতিল করতে হয়েছে তাদের। এদিকে এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে যে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্পনসরশিপ বাতিল করলেও ড্রিম ইলেভেনের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে না বিসিসিআই।
গত ২০২৩ সালে বাইজু’স সরে দাঁড়ানোর পর ড্রিম ইলেভেনের সঙ্গে ৩৫৮ কোটি টাকায় ৩ বছরের জন্য চুক্তি করে ভারতীয় বোর্ড। চুক্তির মেয়াদ ছিল আসন্ন ২০২৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত। কিন্তু পরিবর্ত পরিস্থিতিতে সময়ের আগেই ছিন্ন হচ্ছে চুক্তি।
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোর্ডের জনৈক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ড্রিম ইলেভেন -এর প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ে বিসিসিআইয়ের অফিসে গিয়ে সিইও হেমাঙ্গ আমিনকে বলে দিয়েছেন যে তাঁরা আর কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। এমনকি আসন্ন এশিয়া কাপেও তাঁরা টিম ইন্ডিয়ার প্রধান স্পনসর থাকছেন না। এহেন অবস্থায় বোর্ড শীঘ্রই একটি নতুন টেন্ডার প্রকাশ করতে চলেছেন বলেও জানিয়েছেন উক্ত কর্তা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, সময়ের আগে চুক্তি ছিন্ন করলেও নতুন আইনের কারণেই অনলাইন বেটিং সংস্থাটির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না রজার বিনির নেতৃত্বাধীন বোর্ড। যদিও এর জেরে শুধুমাত্র বিসিসিআই-ই নয়, বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়েছে খোদ ড্রিম ইলেভেন-ও। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন লিগ এবং ক্রিকেটারদের স্পনসরশিপের দায়িত্বে রয়েছে সংস্থাটি। তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের তালিকায় আছে মহেন্দ্র সিং ধোনি, রোহিত শর্মা, হার্দিক পাণ্ডিয়া, ঋষভ পন্থ এবং জশপ্রীত বুমরাহের মত নাম। স্পনসরশিপ বাতিলের জেরে খুব স্বাভাবিকভাবেই বড়সড় সংকটের মুখে পড়েছে ড্রিম ইলেভেন।
গত ২০২০ সালে ভারত-চিন সামরিক উত্তেজনার কারণে আইপিএল থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল চিনা সংস্থা ভিভো। এই সময় তাদের পরিবর্তে প্রতিযোগিতার টাইটেল স্পনসর হয়ে ওঠে ড্রিম ইলেভেন-ই। এর পর থেকে আইপিএলে একাধিক দলকেও স্পনসর করেছে সংস্থাটি। এ ছাড়া তারা ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের অফিসিয়াল ফ্যান্টাসি পার্টনার এবং নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা সুপার স্ম্যাশের-ও টাইটেল স্পনসর। তবে আইপিএল থেকে Dream11 যে পরিমাণ আয় করে, বাকি প্রতিযোগিতাগুলি তার ধারেকাছেও নেই। সব মিলিয়ে এই দেশে অনলাইন বেটিং অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ায় আগামী দিনে সংস্থাটির টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।