ভারতীয় ক্রিকেটারদের ফিটনেস বৃদ্ধি করতে রাগবির ধাঁচে চালু হতে চলেছে ব্রঙ্কো টেস্ট। জানা গিয়েছে এই বিশেষ ধরনের ফিটনেস টেস্টটির ভাবনা গত জুন মাসে দায়িত্ব নেওয়া স্ট্রেংথ এবং কন্ডিশনিং কোচ আদ্রিয়ান লে রু’র মস্তিষ্কপ্রসূত। যা পছন্দ হয় খোদ গুরু গম্ভীরেরও। এ দিকে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারির দাবি, ওয়ানডে দল থেকে অধিনায়ক রোহিতকে ছাঁটতেই ব্রঙ্কো টেস্ট চালু করতে চলেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এরই মাঝে ব্রঙ্কো টেস্ট নিয়ে নতুন করে বোমা ফাটালেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবি ডি ভিলিয়ার্স।
সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে ব্রঙ্কো টেস্ট নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন এবিডি। ব্রঙ্কো টেস্টকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিতর্কের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। সেই আগুনে ঘি ঢেলে এবি বলেন, “১৬ বছর বয়স থেকেই এটা আমি করে আসছি। তবে শুরুতে বিষয়টি ওপর কোনও ধারণাই ছিল না। তখন আমাকে বোঝানো হল ব্রঙ্কো টেস্ট কী। দক্ষিণ আফ্রিকায় একে আমরা বলি, স্প্রিন্ট রিপিট এবিলিটি টেস্ট।”
এর আগে মনোজ তিওয়ারি বলেছিলেন, ব্রঙ্কো টেস্ট নামের ফিটনেস পরীক্ষাটি রোহিত শর্মার জন্য খুবই কঠিন হতে চলেছে। এ বার ডি ভিলিয়ার্স-ও এই টেস্ট নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন গিল-বুমরাহদের। দলের এক সূত্র সম্প্রতি জানিয়েছেন, বিসিসিআইয়ের সঙ্গে বার্ষিক চুক্তিতে থাকা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুতে ব্রঙ্কো টেস্ট দিয়েছেন। এ ছাড়া বোলারদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা যেন জিমে বেশিক্ষণ সময় না কাটিয়ে দৌড়ঝাঁপেই মনোনিবেশ করেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক ব্রঙ্কো টেস্ট নিয়ে তুলে ধরেছেন নিজের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কাহিনি। তাঁর দাবি, এই টেস্ট দিতে গিয়ে একেবারে মরতেই বসেছিলেন তিনি।
এবির কথায়, “এই টেস্ট সবচেয়ে খারাপ কাজগুলির একটি। আমার পরিষ্কার মনে আছে, প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, সুপারস্পোর্ট পার্কে, বিশেষ করে যেখানে খুব বেশি অক্সিজেন থাকে না, সেখানে শীতের সকালে এই ভয়ঙ্কর পরীক্ষাটি দিতে হয়েছিল। এই জায়গা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৫০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এই পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমি প্রায় মরেই যাচ্ছিলাম। সেই দিনগুলির কথা ভাবলে আজও শিউরে উঠি আমি।” তিনি জানিয়েছেন, ব্রঙ্কো টেস্ট চলাকালীন প্রায়শই হাঁপাতে হত তাঁকে। সেই কথা মনে করিয়ে টিম ইন্ডিয়াকে সতর্ক করেছেন দীর্ঘদিন আরসিবি-তে খেলা কিংবদন্তি। যাঁর জনপ্রিয়তা ভারতেও প্রায় আকাশছোঁয়া।
উল্লেখ্য, ফিটনেসের জন্য এতদিন ইয়ো ইয়ো টেস্টের ওপরই নির্ভর করে এসেছে ভারতীয় ক্রিকেট। তবে ব্রঙ্কো টেস্টের বিষয়টি পুরোপুরি আলাদা। এই টেস্ট দিতে সাধারণত দেখা যায় রাগবি খেলোয়াড়দের। ব্রঙ্কো টেস্টে প্রথমে ২০ মিটার দৌড়ে আবার স্টার্টিং পয়েন্টে ফিরে আসতে হয়। এর পর ৪০ মিটার দৌড়ে ফেরত আসতে হয়। তার পর আবার ৬০ মিটার দৌড়ে ফিরতে হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি হল একটি সেট। এভাবে একবারে মোট পাঁচটি সেট সম্পূর্ণ করতে একজন ক্রীড়াবিদকে মোট ১,২০০ মিটার দৌড়তে হয়। শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেটারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৫ মিনিটের মধ্যে এই পাঁচটি সেট সম্পূর্ণ করতে।