শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আচমকা পদত্যাগ করেছিলেন গত ২১শে জুলাই। তারপর থেকেই কার্যত ভ্যানিশ তিনি। অবশেষে নবনির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেখা মিলল প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের।
চন্দ্রপুরম পন্নুসামি রাধাকৃষ্ণন শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের ১৫তম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে পদ ও গোপনীয়তার শপথবাক্য পাঠ করান।
এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় ও ভেঙ্কাইয়া নাইডু, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থী রাধাকৃষ্ণন ৪৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিরোধী প্রার্থী বি. সুদর্শন রেড্ডি পান ৩০০ ভোট। ফলাফল ঘোষণার সময় জানানো হয়, মোট ৭৮১ সাংসদের মধ্যে ৭৬৭ জন ভোট দেন, যা ৯৮.২% উপস্থিতির রেকর্ড। এর মধ্যে বৈধ ভোট ছিল ৭৫২টি, আর ১৫টি ভোট বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। ফলে প্রথম পছন্দের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন হয় ৩৭৭ ভোট।
এনডিএ-র পক্ষে কাগজে কলমে ছিলেন ৪২৭ সাংসদ। সঙ্গে ওয়াইএসআরসিপির ১১ জন সাংসদ রাধাকৃষ্ণনকে সমর্থন করেন। ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায়, প্রত্যাশার থেকেও তিনি ১৪টি ভোট বেশি পান, যা বিরোধী শিবির থেকে ক্রস-ভোটিংয়ের জল্পনা বাড়িয়েছে।
ফলাফল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স-এ লিখেছেন, “২০২৫ সালের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভের জন্য সিপি রাধাকৃষ্ণনজিকে অভিনন্দন। সমাজসেবা এবং গরিব ও প্রান্তিক মানুষকে ক্ষমতায়ন করাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য ছিল। আমি নিশ্চিত, তিনি একজন অসাধারণ উপ-রাষ্ট্রপতি হবেন, যিনি আমাদের সাংবিধানিক মূল্যবোধকে শক্তিশালী করবেন এবং সংসদীয় আলোচনাকে সমৃদ্ধ করবেন।”
উল্লেখ্য, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় গত ২১ জুলাই হঠাৎই পদত্যাগ করেন, যদিও তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৭ সালের ১০ আগস্টে। সরকারি ভাবে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখানো হলেও সূত্রের দাবি, কেন্দ্রের সঙ্গে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল। বিশেষত বিচারপতি যশবন্ত বর্মার ইমপিচমেন্ট প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থানের সঙ্গে তিনি একমত না হওয়া নিয়ে পদত্যাগ প্রসঙ্গে জল্পনা তীব্র হয়।
সংবিধান অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতির মৃত্যু, পদত্যাগ, অপসারণ বা অন্য কোনও কারণে পদ শূন্য হলে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করতে হবে। নতুন নির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি পূর্ণ পাঁচ বছরের মেয়াদ ভোগ করবেন, তাঁর শপথ নেওয়ার দিন থেকে।