যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী ক্যাম্পাসের লেকে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীরা জানান, রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তাঁকে লেকের জলে ভেসে থাকতে দেখা যায়।
আগের দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক উৎসব চলছিল। ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ নজরে আসে লেকের জলে ওই তরুণীর দেহ। নিরাপত্তারক্ষী ও কয়েকজন ছাত্র মিলে দ্রুত তাঁকে লেকের জল থেকে তুলে আনেন। তখন তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের এক হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মী জানিয়েছেন, “আমরা তাঁকে তাড়াতাড়ি বাইরে আনলেও তখন তিনি নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন না। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে আর ফেরানো যায়নি।”
হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা নিয়ম মেনে যাদবপুর থানায় খবর দিয়েছি। এ ধরনের ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক।”
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়।
মৃত্যুর ঘটনাটি ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। তিনি কীভাবে লেকে পড়লেন, দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে চাইছে না পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীর নাম বা পরিচয় প্রকাশ করেনি। একইসঙ্গে কোনও বিবৃতিও দেওয়া হয়নি। তবে খবর পেয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে একাধিকবার ছাত্র আন্দোলন, দুর্ঘটনা, নতুন ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের উপর অত্যাচারের কারণে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা আলোচনায় এসেছে। এবারও ক্যাম্পাসের ভেতরে ছাত্রীর মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে। সিসিটিভি ও পুলিশ আউটপোস্টের দাবিতে ফের সরব তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এক্স হ্যান্ডলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি লিখেছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভির প্রয়োজনীয়তা কতটা, তা আবার প্রমাণ হয়ে গেল। সেদিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম, এই খারাপ দিনগুলো না দেখার জন্যই। অনেক হুমকি, ধমক, ঈর্ষা, কুকথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ ছিল সিসিটিভির পক্ষে। কার্যক্ষেত্রে কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, তাও প্রকাশ্যে আসবে।