হুগলির কোন্নগরের নবগ্রামে একটি বেসরকারি হোমে এক তরুণীর শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নিগ্রহ করার অভিযোগে হোমের কর্ণধার সহ মোট চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শ্লীলতাহানির এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক কাজিয়া। ধৃত হোমের সেক্রেটারি অজয় চট্টোপাধ্যায় নবগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য। ধৃত বাকি তিন জনের মধ্যে একজন মহিলা। শনিবার ধৃত চার জনকেই শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় নির্যাতিতা ওই তরুণী হোমে থাকতেন। আবাসিক হিসেবে হোমে থেকেই ওই মেধাবী তরুণী সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার ওই তরুণী শ্রীরামপুর মহিলা থানায় হোম কর্তৃপক্ষ ও হোমের কর্মীদের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। নির্যাতিতা তরুণীর নির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে শুক্রবার রাতে হোম সেক্রেটারি সহ মোট চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
শনিবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গেছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নবগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব মজুমদার জানিয়েছেন ওই তরুণী খুবই মেধাবী। ডব্লিউ বি সি এস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অপূর্ববাবু বলেন, কিছুদিন আগে ওই তরুণী তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে এসে তার উপর মানসিক নির্যাতন ও খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তরুণীকে পুলিশের দারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত অজয় চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে অপূর্ব মজুমদার বক্তব্য, উনি একসময় পঞ্চায়েতের সদস্য থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। এই ঘটনায় ধৃত অজয়ের তৃণমূলের যোগ প্রসঙ্গে সিপিআইএমের কোন্নগর এরিয়া কমিটির সম্পাদক আশিস দে বলেন ধৃত হোম সেক্রেটারি অজয় চট্টোপাধ্যায় দুই বারের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। শুধু তাই নয়, বর্তমান নবগ্রামের যে সমবায় ব্যাংক তৃণমূল দখল করেছে তার তিনি সদস্য হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
অন্যদিকে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে যে এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। যখনই তৃণমূলের কেউ অন্যায়ের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধরা পড়েছে তখনই দলের সঙ্গে কোনও যোগ নেই বলে দায় ঝেড়ে ফেলেছে।
তবে হোমের কর্মীদের একাংশ অবশ্য জানিয়েছেন হোম সেক্রেটারিকে তারা দীর্ঘদিন কাছ থেকে দেখছেন। তাদের মতে, তিনি যথেষ্টই ভালো লোক ছিলেন।