অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ জয়রাম রমেশ এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, শিরোনাম নিয়ন্ত্রিত করেও বাস্তবতা আড়াল করা যাচ্ছে না। “মোদানি এন্টারপ্রাইজ” বলে কটাক্ষ করে রমেশ লিখেছেন, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলা ২৪টি তদন্তের মধ্যে মাত্র দুটি মামলায় সেবি “ক্লিন চিট” দিয়েছে, বাকি ২২টি মামলার তদন্ত এখনো চলছে। কংগ্রেস আগেই নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গৌতম আদানীর আঁতাত নিয়ে “হাম আদানিকে হ্যায় কৌন” নাম দিয়ে শতাধিক প্রশ্নসূচী প্রকাশ করেছে মোদির উদ্দেশ্যে।
রমেশের অভিযোগ, ২ মার্চ ২০২৩-এ সুপ্রিম কোর্ট সেবিকে নির্দেশ দিয়েছিল হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পরবর্তী তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে। কিন্তু প্রথম রিপোর্ট আসে প্রায় দুই বছর সাত মাস পর, একাধিকবার মেয়াদ বাড়ানোর পর। এখনো ২২টি মামলা বাকি, যার মধ্যে রয়েছে :
•আদানি গ্রুপে ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের অভিযোগ,
•ন্যূনতম পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং নীতির লঙ্ঘন,
•১৩টি “সন্দেহজনক লেনদেন” যেগুলি নিয়ে ২৫ আগস্ট ২০২৩-এ সেবি নিজেই সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিল যে তদন্ত চলছে।
•এসব মামলার সঙ্গে জড়িত আদানি-ঘনিষ্ঠ নাসের আলি শাবান আহলি ও চ্যাং চুং-লিং-এর অফশোর ডিলিং।
জয়রাম রমেশ বলেন, “মোদানি কেলেঙ্কারি” সেবির সীমিত তদন্তের বাইরে আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে রয়েছে। কংগ্রেসের মতে, এর মধ্যে রয়েছে :
•ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতর-এর মতো সংস্থাকে ব্যবহার করে জোর করে বিভিন্ন কোম্পানিকে তাদের সম্পদ আদানি গ্রুপকে বিক্রি করতে বাধ্য করা।
•বিমানবন্দর ও বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো সম্পদের পক্ষপাতদুষ্ট বেসরকারিকরণ, যাতে সুবিধা মেলে কেবল আদানি গ্রুপের।
•কূটনৈতিক সম্পর্কের অপব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশে আদানি গ্রুপকে চুক্তি পাইয়ে দেওয়া।
•আহলি ও চ্যাং-এর মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে কয়লা আমদানি, যার ফলে গুজরাটের আদানি পাওয়ার স্টেশন থেকে বিদ্যুতের দাম বেড়েছিল।
•প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারি, যেখানে গৌতম আদানি ও তাঁর সাত সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে উচ্চমূল্যে সোলার পাওয়ার কন্ট্রাক্ট পাইয়ে দেওয়ার জন্য। এই বিষয়ে মার্কিন আদালত থেকে সমন এলেও মোদি সরকার প্রায় এক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর ‘অংশীদারকে’ তা পাঠায়নি।
কংগ্রেসের এই অভিযোগ নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক উসকে দিয়েছে। একদিকে যেখানে সেবি আদানি গ্রুপকে আংশিক স্বস্তি দিয়েছে, অন্যদিকে কংগ্রেস দাবি করছে—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পৃষ্ঠপোষকতায় আরও বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির জাল ধরা পড়তে বাকি।