পুজোর মুখে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। রাতভর মুষলধারে বৃষ্টি। শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। কলকাতা শহরের বিভিন্ন মন্ডপে শেষ মুহূর্তে পুজোর প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটিয়েছে ওই মুষলধারে বৃষ্টি।
পুজোর আনন্দে যখন সেজে উঠেছে বাংলা, তখনই এই ঝমঝম করে বৃষ্টি। ভাসছে শহর কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতার রাস্তাঘাট। কোথাও হাঁটু পর্যন্ত জল, কোথাও তারও উপরে। এতে শহরের স্বাভাবিক যান চলাচল দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে, চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হল, আগামী ২৫শে সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। এর ফলে পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজোর প্রতিটি দিনই ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। বিশেষ করে দুই মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনা সহ পশ্চিমের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, শহরের কিছু কিছু এলাকায় ২৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়ার দাপটও থাকবে। নদী ও সমুদ্র উত্তাল থাকায় আগামী ২৭শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দুর্ভোগ চরমে, পুজোর প্রস্তুতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বৃষ্টি।
টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মানুষ। গতকাল রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টি আজও অব্যাহত। মেঘলা আকাশ এবং দমকা হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকা, বিশেষ করে সুন্দরবন অঞ্চলে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা কঠিন পরিস্থিতির শিকার।
এদিকে, মহালয়ার পর থেকে বিভিন্ন মণ্ডপে দুর্গাপূজার উদ্বোধন শুরু হলেও টানা বৃষ্টির কারণে অনেক পুজো মণ্ডপের প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এতে আয়োজকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলের একাধিক এলাকায় জল জমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের যাতায়াত, স্কুল-কলেজ এবং দৈনন্দিন বাজার-হাটে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি দমদমের একাধিক স্কুল জলমগ্নতার কারণে মঙ্গলবার বন্ধ করে দিতে হয়।
আবহাওয়া দফতরের কমলা সতর্কতা জারি থাকায় উৎসবের আবহেও দুর্ভোগের চিত্রই ফুটে উঠছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টি জারি থাকবে। পাশাপাশি, ২৫শে থসেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে পুজোর দিনগুলোতে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে। বিশেষ করে অষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে।