ফের গুরুতর অভিযোগ উঠল দিল্লির স্বঘোষিত গডম্যান চৈতন্যনন্দ সরস্বতী ওরফে স্বামী পার্থসারথীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির বসন্তকুঞ্জে তার বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করা ১৭ জন ছাত্রী তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে এক তরুণী ২০১৬ সালে প্রথমে এফআইআর করেছিলেন। তিনি আবার জানিয়েছেন, ভন্ড বাবা তাঁর উপর “শকুনের নজর” রাখতেন। তিনি জানান, মাত্র ২০ বছর বয়সে ওই ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি, কিন্তু মাত্র আট মাসের মধ্যেই বাধ্য হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেন।
তরুণীর অভিযোগ, ক্লাস শেষ হওয়ার পর বাবার দফতরে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে নানাভাবে হেনস্থা করতেন। বারবার অশ্লীল মেসেজ পাঠাতেন, তাঁকে “বেবি” ও “সুইট গার্ল” বলে ডাকতেন। আরও অভিযোগ, বিদেশ নিয়ে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে বলতেন দুবাইয়ে পড়াশোনার সুযোগ করে দেবেন, সব খরচ তিনিই বহন করবেন। এমনকী ডিনারে যাওয়া, বিলাসবহুল হোটেলে থাকার প্রস্তাবও দিতেন। তরুণীর কথায়, “আমি ভয় পেতাম, কিন্তু চাপ সৃষ্টি করা হত। বাবার লোকেরা আমার মোবাইল কেড়ে নেয়, আমাকে একা হোস্টেলে থাকতে বাধ্য করে। রাতে রুম ফোনে কল করে হেনস্থা করতেন।”
তরুণী আরও বলেন, বাবা তাঁকে মথুরা যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি আর সহ্য করতে না পেরে সব জিনিস ফেলে রেখে হস্টেল থেকে পালিয়ে যান। পরে বাবার অনুগামীরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে চাপ দিতে শুরু করে, এমনকী নম্বর ও ঠিকানা বাবাই দিয়েছিলেন। তবে তাঁর বাবা প্রতিবাদ করে তাঁদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও ২০০৯ ও ২০১৬ সালে একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল চৈতন্যনন্দের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ রয়েছে, প্রভাব ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তিনি তখন শাস্তির হাত থেকে বাঁচেন। এবারের ঘটনায় গত আগস্ট মাসে ১৭ জন মহিলা একসঙ্গে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল তিনি লন্ডনে আছেন, তবে পরে তাঁকে আগ্রায় দেখা যায়।
প্রথমে দিল্লি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলেও কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি তা তুলে নেন। ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশ দিল্লি-সহ হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও রাজস্থানে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। তাঁর দেশ ছেড়ে পালানো আটকাতে ‘লুকআউট সার্কুলার’ জারি করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত বাবার খোঁজ মেলেনি।