তামিলনাড়ুর কারুরে অভিনেতা থেকে রাজনীতিতে আসা তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজগম (টিভিকে) প্রধান বিজয়ের নির্বাচনী প্রচারসভায় শনিবার ভয়াবহ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু সহ অন্তত ৩১ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে, আহত শতাধিক। গুরুতর ভিড়ের কারণে একাধিক সমর্থক অজ্ঞান হয়ে পড়লে বিজয় তার বক্তব্য মাঝপথে থামাতে বাধ্য হন।
ঘটনার পরপরই জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভিড়ের চাপে বহু পার্টি কর্মী ও শিশু অজ্ঞান হয়ে গেলে বিজয় মঞ্চ থেকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং অ্যাম্বুলেন্সের জন্য পথ ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে ডিএমকে নেতা ভি সেন্টিল বালাজি ও জেলা প্রশাসক হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন।
অনুমতির তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি ভিড় হয়েছিল বিজয়ের জনসভায়। জনসভার জন্য প্রশাসনিক অনুমতিতে ১০ হাজার মানুষের উপস্থিতি অনুমান করা হলেও, সরকারি হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ওই জায়গায় জড়ো হয়েছিলেন।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে ঘটনাকে “উদ্বেগজনক” বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, আহতদের চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি সেন্টিল বালাজি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যয়ম, জেলা প্রশাসক ও শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি তিরুচিরাপল্লি থেকে মন্ত্রী অনবিল মাহেশকে তৎপরতার সঙ্গে সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্ট্যালিন জনসাধারণকে চিকিৎসক ও পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। আগামিকাল তিনি স্বয়ং কারুর সফরে যাবেন বলেও জানা গেছে।
হাসপাতালের সামনে ভিড় বাড়তে থাকায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। অসুস্থদের সহায়তায় পানীয় জল বিতরণ ও মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়। এ সময় এক নয় বছরের মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। বিজয় মঞ্চ থেকে পুলিশ ও কর্মীদের শিশুটিকে খুঁজে বের করার আহ্বান জানান, যা আবারও ভিড়ের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স-এ পোস্ট করে ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “তামিলনাড়ুর কারুরে রাজনৈতিক সমাবেশে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা রইল। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা করি।”
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটি ছিল বিজয়ের রাজ্যজুড়ে প্রচারাভিযানের অংশ। বিশৃঙ্খলার পর প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় এবং সমাবেশটি শেষ পর্যন্ত আর কোনও বড় বিঘ্ন ছাড়াই শেষ হয়।