
সমীর ঘোষ
মানুষের থাকার অযোগ্য হয়ে উঠেছে প্যালেস্তাইন অধ্যুষিত গাজা।ইজরায়েলের নির্বিচারে গোলাগুলি ও গণহত্যার শিকার হওয়া গাজাবাসীর কাছে কোনওমতে টিকে থাকাটাই এখন বড় ব্যাপার।এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মহিলাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।যুদ্ধের ফলে একদিকে খাদ্যের সংকট, কাজের অভাব ও ব্যাপক ঘরবাড়ি হারানোর সুযোগে কিছু পুরুষ মানবিক সাহায্যের নামে নারীদের যৌন শোষণের ফাঁদে ফেলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।সংবাদ সংস্থার রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। যেমন সন্তানদের জন্য খাবার জোগাড়ে হিমশিম ৩৮ বছর বয়সী ছয় সন্তানের এক মা জানিয়েছেন এক ব্যক্তি তাকে একটি সংস্থায় চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে নেয়। কিন্তু পরে তাকে একটি খালি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ভয় দেখিয়ে সম্পর্কে বাধ্য করে। পরে ওই ব্যক্তি তাকে প্রায় ৩০ ডলার ও কিছু খাবার দিলেও চাকরির প্রতিশ্রুতি ছিল মিথ্যে।এইরকম সংবাদসংস্থার কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আরও পাঁচ মহিলা।তাঁরা জানিয়েছেন খাবার, অর্থ, প্রয়োজনীয় জিনিস ও চাকরির বিনিময়ে তাদের কাছে যৌন সুবিধা দাবি করা হয়েছে। কেউ সরাসরি বলেছে—আমাকে স্পর্শ করতে দাও, কেউ বা বলেছে—আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।মানবাধিকার কর্মীরা জানাচ্ছেন যুদ্ধের পরিস্থিতিতে মহিলাদের উপর এই ধরনের শোষণ নতুন কিছু নয়। দক্ষিণ সুদান থেকে হাইতি পর্যন্ত এমন ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।তাঁদের মতে মানবিক সংকট মানুষকে নানা দিক থেকে অসহায় করে তোলে—যৌন হিংসা তার অন্যতম ফল।

মহিলা ও কন্যাশিশুদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে গাজার বর্তমান পরিস্থিতি। প্যালেস্তাইনের মনোবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন তারা বহু নারীর চিকিৎসা করেছেন যাদের সাহায্যের বিনিময়ে যৌন সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন গর্ভবতীও হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সামাজিক লজ্জার কারণে তারা সরাসরি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেও চাইছেন না।গাজার উইমেন’স অ্যাফেয়ার্স সেন্টারের পরিচালক আমাল শিয়াম ইসরায়েলের অবরোধ এবং মানবিক সাহায্যের বাধাই মহিলাদের এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন।যদিও এমন অভিযোগ ইসরায়েল অস্বীকার করেছে, বরং সব দায় হামাসের ঘাড়ে চাপিয়েছে।