
পাকিস্তানের অর্থনীতি কয়েক দশকের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে ভাঙনের পথে পৌঁছেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে দেশের সঞ্চয় হার সবচেয়ে কম, যা দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। পাকিস্তান স্টেট ব্যাঙ্কের বার্ষিক অর্থনীতি পর্যালোচনা ২০২৪-২৫ অনুযায়ী, দেশের অর্থনীতি গভীর কাঠামোগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ক্রমাগত আর্থিক ঘাটতি, কম অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়, দুর্বল উৎপাদনশীলতা এবং বারবার জলবায়ু বিপর্যয় দেশকে পরনির্ভরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
স্টেট ব্যাঙ্ক ২০২৬ অর্থবর্ষের জন্য জিডিপি বৃদ্ধির হার ৩.২৫ থেকে ৪.২৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতি ৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা দেখিয়েছে। তবে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষি জমি ধ্বংস হওয়ায় সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে। পুনর্গঠন খরচ সাময়িকভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারলেও দেশের ঝুঁকিপূর্ণ আর্থিক অবস্থাকে আরও বাড়াতে পারে।
দেশে কম অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় এবং ভোগ-ভিত্তিক অর্থনীতি প্রধান সমস্যা। পাকিস্তানের জিডিপির প্রায় ৯২ শতাংশ ভোগে চলে যায়, যা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করছে। সরকারের ঋণ চক্র এবং ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার দুর্বলতা ঋণের সহজ প্রবাহকে সীমিত করেছে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এখনও আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে, তারা অনানুষ্ঠানিক সঞ্চয় পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল।
দেশের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ ৩০ বছরের কম এবং প্রায় ৪৪ শতাংশ দারিদ্র্যর মধ্যে রয়েছে। এসবিপি শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে। যদি না দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে কম সঞ্চয় ও উচ্চ ঋণের চক্র পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে দীর্ঘমেয়াদে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
