
নদিয়ার এক পরিযায়ী শ্রমিকের অকালমৃত্যু ঘিরে শোক ও রহস্য গুজরাতে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন হরিণঘাটার মশিয়ার বিশ্বাস (৩১)। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছেলের এই মর্মান্তিক পরিণতি স্তব্ধ করে দিয়েছে সমগ্র এলাকা।
দু’মাস আগে কাজের সন্ধানে গুজরাতের একটি নির্মাণ সংস্থায় যোগ দেন মশিয়ার। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্মীয়মাণ একটি বহুতলের দোতলায় কাজ চলার সময় আচমকাই তিনি নিচে পড়ে যান। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে, তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। নিয়মিত ফোনে কথা হত তাঁর সঙ্গে, তবুও শেষবার হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শুক্রবার সকালে একটি অচেনা নম্বর থেকে মৃত্যুর খবর আসে। শনিবার সন্ধ্যায় যখন গুজরাত থেকে মশিয়ারের নিথর দেহ গ্রামে পৌঁছায়, শোকের আবহে ভরে ওঠে মোল্লাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কুরুম বেরিয়াম এলাকা। মা-বাবা, স্ত্রী ও একরত্তি মেয়েকে নিয়েই ছিল মশিয়ারের ছোট সংসার এখন সেই ঘরে নেমেছে নীরবতা।
স্থানীয়দের মতে, মশিয়ার ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য। তাঁর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে আর্থিক ভিত্তি। প্রতিবেশীদের দাবি, শ্রমিক নিরাপত্তায় গাফিলতির জেরেই ঘটেছে এই বিপর্যয়। ঘটনার পর থেকেই নির্মাণ সংস্থার কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এ মৃত্যু কি শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি লুকিয়ে আছে অন্য কোনও অন্ধকার রহস্য? পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা মশিয়ারের পরিবার এখন কেবল একটাই দাবি তুলেছে ন্যায় বিচার ও সত্য উদ্ঘাটন।
গুজরাতের এই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু ফের মনে করিয়ে দিল, উন্নয়নের শহরে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের জীবনের দাম এখনও কতটা তুচ্ছ।
