
ভারত ও ভুটানের মধ্যে প্রস্তাবিত প্রথম রেলপথের ঘোষণা উত্তরবঙ্গের বাণিজ্য ও পর্যটন খাতে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। বানারহাট থেকে ভুটানের সামসে পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ইতিমধ্যেই ৪০৩৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছেন। এই রেলপথের মাধ্যমে জলপাইগুড়ি জেলা ও ডুয়ার্স অঞ্চলের বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পও লাভবান হবে।
নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি, তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যেই নতুন সম্ভাবনার জন্য আশাবাদী। পণ্যবাহী ট্রেন চালু হওয়ায় ভুটান থেকে ভারতে পণ্য আনা অনেক সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। এরপর যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হলে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং জলপাইগুড়ি ও ডুয়ার্স অঞ্চলের পর্যটন চিত্র পুরোপুরি বদলে যাবে।
নিরাপত্তার দিক থেকেও এই রেলপথের গুরুত্ব রয়েছে। বানারহাট থেকে খুব কম দূরত্বে অবস্থিত বিন্নাগুড়ি সেনা শিবিরের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর যাতায়াত অনেক সহজ হবে। চিন-ভারত সীমান্তে উত্তেজনার পরিস্থিতিতেও সেনার মুভমেন্ট দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
রেলমন্ত্রক আশা করছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে বানারহাট-সামসে প্রকল্প শেষ হবে। প্রকল্প সম্পন্ন হলে প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন, তারপর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথে দুটি স্টেশন, একটি প্রধান সেতু, ২৪টি ছোট সেতু, একটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ ও ৩৭টি আন্ডারব্রিজ তৈরি করা হবে।
জলপাইগুড়ি জেলা চেম্বার অফ কমার্সের মতে, এই রেলপথের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে স্থল বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি পর্যটন ক্ষেত্রে সরাসরি থিম্পু পর্যন্ত যাতায়াতের সুযোগ তৈরি হলে জেলার অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। নতুন অভিবাসন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পর্যটকরা দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে, যা উত্তরবঙ্গের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করবে।
