
রাজ্যে ধান বিক্রির নতুন নির্দেশিকা জারি হতেই বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। এবার থেকে একজন কৃষক একবারে সর্বোচ্চ ১৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন, যেখানে গত বছর সীমা ছিল ৩০ কুইন্টাল। পাশাপাশি পুরো মৌসুমে বিক্রির সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছে ৯০ কুইন্টাল। ফলে ছোট জমির মালিক এবং একই পরিবারের একাধিক সদস্যের আলাদা জমি থাকা সত্ত্বেও, কৃষক ক্রেডিট কার্ড একটিই থাকায় ধান বিক্রিতে বাধা পড়ছে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জমির কাগজপত্র বা নামজারি না থাকায় বহু কৃষক সরকারি মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। এর ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা খোলা বাজারে ফড়েদের হাতে কম দামে ধান বেচছেন। সরকারি দামের তুলনায় প্রতিকুইন্টালে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত কম পাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় এই সমস্যা প্রকট। প্রান্তিক ও জনজাতি কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদের অনেকে বলছেন, প্রকৃত চাষিরা যেখানে নিয়মের জটিলতায় বিক্রি করতে পারছেন না, সেখানে কিছু ফড়ে সামান্য জমি দেখিয়ে কৃষক ক্রেডিট কার্ড বানিয়ে সরকারি দামে ধান বিক্রি করছে। ফলে প্রকৃত পরিশ্রম করা কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন লাভের অংশ থেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধান বিক্রির সীমা নির্ধারণে জমির পরিমাণ ও পরিবারভিত্তিক উৎপাদন বিবেচনা না করলে কৃষকরা আরও ক্ষতির মুখে পড়বেন। সরকারের উদ্দেশ্য ধান কেনার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা হলেও বাস্তবে তা প্রান্তিক চাষিদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষক মহলে এখন একটাই প্রশ্ন নতুন নিয়মের জালে প্রকৃত চাষিরাই কি ফেঁসে যাচ্ছেন?
