
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেমে এসেছে ভয়ঙ্কর সংকটের কালো মেঘ। সাম্প্রতিক এক অডিটে প্রকাশ পেয়েছে, দেশের ২৪টি ব্যাংকে মোট ১.৫৫ লক্ষ কোটি টাকার বিশাল মূলধন ঘাটতি রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ ঘাটতি দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই অস্বাভাবিক মূলধন ঘাটতির পেছনে রয়েছে ক্রমবর্ধমান অনাদায়ী ঋণ (বেআইনি বা খারাপ ঋণ) এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা। অনেক ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরেই বিপুল পরিমাণ অনাদায়ী ঋণের ভারে জর্জরিত, অথচ সঠিক সংস্কার বা জবাবদিহিতার অভাবে পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অডিট রিপোর্টে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (Capital Adequacy Ratio) মারাত্মকভাবে কমে গেছে, যা আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় অনেক নিচে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই সঙ্কট যদি দ্রুত মোকাবিলা না করা হয়, তাহলে তা পুরো অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আমানতকারীদের আস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়বে, বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস পাবে, এমনকি ব্যাংক খাতে ডিফল্টের ঝুঁকিও বাড়বে। এতে শিল্পোৎপাদন, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি সামলাতে বৈঠক শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদদের দাবি, কেবল স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ নয়, ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ইতিহাসে এই মূলধন ঘাটতিকে সবচেয়ে বড় আর্থিক বিপর্যয়ের লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে এর প্রভাব দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
