
আমেদাবাদের ভয়াবহ এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার চার মাস পরও বেঁচে থাকা বিশ্বাস কুমার রমেশের জীবন থমকে গেছে। ১২ জুন লন্ডনগামী বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি মেডিক্যাল হোস্টেলে ভেঙে পড়েছিল। সেই দুর্ঘটনায় ২৪১ জন যাত্রী প্রাণ হারালেও, ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে একাই পায়ে হেঁটে বেরিয়ে আসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ। কিন্তু সেই অলৌকিক বেঁচে থাকা আজ তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর রমেশ এখন একা, নিজের পরিবার থেকেও দূরে সরে গেছেন। স্ত্রীর ও ছেলের সঙ্গে কথা বলেন না, দিন কাটান নীরবতায়। দুর্ঘটনায় নিজের ভাইকে হারানোর পর থেকে তাঁর মন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ঘুম আসে না, আতঙ্কে ভরে থাকে মন। শরীরেও রয়ে গেছে সেই ঘটনার ছাপ পিঠ, হাঁটু ও কাঁধের ব্যথা তাঁকে আজও কাবু করে রেখেছে। চিকিৎসকদের মতে, তিনি পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে (PTSD) আক্রান্ত।
চিকিৎসার পর ভারতে কিছুটা সুস্থ হলেও, ইংল্যান্ডে ফিরে ধারাবাহিক সাপোর্ট পাননি তিনি। মানসিক ও আর্থিক সংকটে থাকা রমেশের পরিবারকেও তেমনভাবে পাশে পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এয়ার ইন্ডিয়া সংস্থা আপাতত ২৫ লক্ষ টাকা অন্তর্বর্তী ক্ষতিপূরণ দিয়েছে, যা আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে তাঁর বর্তমান অবস্থার তুলনায় অপর্যাপ্ত।
চার মাস কেটে গেলেও রমেশের জীবনে ফেরেনি স্বাভাবিকতা। নিজের মা-ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন, বাড়ির বাইরে নির্জনে দিন কাটান তিনি। বেঁচে গিয়েও যেন জীবনের সব আলো হারিয়ে ফেলেছেন রমেশ। তাঁর চোখে এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপের আগুন, আর প্রতিদিন নতুন করে বেঁচে থাকার এক অসহ্য সংগ্রাম।
