
দেওয়ালির পর থেকেই দিল্লির আকাশ যেন ধোঁয়ায় ঢেকে আছে। শুক্রবার সকালে সুইস মনিটর আইকিউ এয়ারের তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর বায়ুদূষণের সূচক গিয়ে ঠেকেছে ভয়ঙ্কর ৭২৭-এ, যা ‘বিপজ্জনক’ স্তর। ভোর থেকেই মেঘলা আবহাওয়ার মতো ঘন কুয়াশায় ঢাকা শহর কার্যত গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজির ধোঁয়া, ফসলের গোড়া পোড়ানো এবং গুরু নানক জয়ন্তীতে ব্যাপক আতসবাজির কারণেই বাতাসে ধুলো ও ধাতুকণার পরিমাণ ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে। হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে ফসল পোড়ানোর ফলে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ একদিনেই প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা হাওয়া এই ধোঁয়াকে রাজধানীর উপরে টেনে এনেছে, ফলে দূষণের মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লির দূষণ সূচক ছিল ৩১১, যা ‘খুব খারাপ’ স্তরে পড়ে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার সকালে তা নেমে এসেছে ৩০৭-এ, তবে বিদেশি সংস্থাগুলির পর্যবেক্ষণ বলছে প্রকৃত অবস্থা তার চেয়ে অনেক ভয়ঙ্কর। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, সরকারি পরিসংখ্যান ও বাস্তব অবস্থার মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে।
রাজধানীর বহু এলাকায় সকাল থেকেই কাশি, চোখ জ্বালা ও শ্বাসকষ্টের অভিযোগ বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে দূষণজনিত অসুস্থতার রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। প্রশাসন স্কুলে আউটডোর কার্যক্রম বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে, পাশাপাশি অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোনোর আবেদন জানিয়েছে।
দিল্লির এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি সামাল দিতে পরিবেশ দফতর একাধিক জরুরি পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে, তবে বাতাসের গতি না বাড়লে শিগগিরই স্বস্তি মিলবে না বলেই আশঙ্কা। রাজধানীবাসী এখন আক্ষরিক অর্থেই দমবদ্ধ জীবনের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
