
ডায়মন্ড হারবারে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারকে ঘিরে বিক্ষোভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার আহত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে এলাকায় পৌঁছনোর পর সুকান্তের গাড়ি ঘিরে ‘গো ব্যাক’ এবং দিলীপ ঘোষের নামে স্লোগান ওঠে। প্রথম থেকেই বিজেপির দাবি ছিল এটি তৃণমূলের সাজানো নাটক। কিন্তু সন্ধ্যায় তৃণমূল একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ করে পাল্টা আক্রমণে নামে।
তৃণমূলের দাবি, অডিয়ো ক্লিপে সুকান্ত নিজেই স্বীকার করেছেন যে বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা আগের লোকসভা প্রার্থী অভিজিৎ দাস (ববি)-র সমর্থক। অডিয়োতে শোনা যায় এক কণ্ঠ বলছে, “তোমরা চেনো না এদেরকে? এরা তো ববির লোক মনে হচ্ছে সব!” পাশ থেকে আরেকটি কণ্ঠ বলে, “সর্বনাশ করেছে!” তৃণমূল এই অডিয়োর পাশে অভিজিৎ দাসের ছবি দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে প্রশ্ন তোলে “সুকান্তবাবুর মুখ ফস্কে কি সত্যিটাই বেরিয়ে গেল?”
বিজেপি পুরো বিষয়টিকে ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করেছে। সুকান্তের বক্তব্য, তৃণমূল মিথ্যে ছবি, ভিডিও বানিয়ে ছড়ানোর কারবার করে; এটিও সেই ধরনের আর একটি জাল অডিয়ো। দুপুরেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পরে, কপালে তিলক এঁকে তৃণমূল কর্মীরাই বিজেপি বলে পরিচয় দিয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত করেছে। তাঁর দাবি, বিক্ষোভে দেখা যাওয়া ‘রাজু’ নামের যুবক তৃণমূলের দুষ্কৃতী শামিমের ঘনিষ্ঠ।
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও সুকান্তের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন বিক্ষোভকারীদের কাউকে তিনি চেনেন না, “এরা তৃণমূলের লোক। শামিমার অফিসে বাইক রেখে গেরুয়া জড়িয়ে এসেছে।” তবে তিনি আরও দাবি করেন, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ‘রাজু’ একসময় বিজেপিতে থাকলেও বহু আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছে।
তৃণমূল অবশ্য বিজেপির এই ব্যাখ্যাকে ‘হতাশার বহিঃপ্রকাশ’ বলে কটাক্ষ করেছে। তাদের বক্তব্য ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির ভিত দুর্বল হয়ে পড়েছে বলেই দলীয় কোন্দল এতটাই প্রকট যে, নিজেদের মধ্যেই ‘ববি গোষ্ঠী’ এবং ‘দিলীপ গোষ্ঠী’-র সংঘাত সামনে চলে এসেছে।
২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে ডায়মন্ড হারবারে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ২০২০ সালে নাড্ডার কনভয়ে হামলার পর ফের একই এলাকায় বিজেপিকে ঘিরে বিক্ষোভ নতুন করে রাজনৈতিক তাপমান বাড়িয়েছে। দুই শিবিরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।
