ইদের পূর্বেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে চড়া রোদের দাপট জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। টানা গরমের ফলে অসহ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শনিবার আবহাওয়া দফতর জানায়, দক্ষিণবঙ্গের চারটি জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন গরমের প্রকোপ কমার সম্ভাবনা নেই। বরং তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রচণ্ড রোদে বাইরে বেরোনোর সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে। তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় ইদের আগে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। কলকাতায় পারদ থাকবে ৩৬-৩৮ ডিগ্রির ঘরে, আর পশ্চিমের কিছু জেলায় তা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরমের অস্বস্তি আরও তীব্র হবে। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা প্রচুর জল পান করা ও রোদ থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, সামান্য স্বস্তির সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবারের পর থেকে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে, তবে রাতের গরমের দাপট সহজে কমার লক্ষণ নেই। সপ্তাহের শেষে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি পর্যন্ত কমার সম্ভাবনা থাকলেও দক্ষিণবঙ্গে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ফলে অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় থাকবে।
বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা বেশি থাকায় গরমের অনুভূতি আরও তীব্র হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গরম থেকে মুক্তি পেতে দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় সেখানে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে এই তীব্র গরম থেকে পুরোপুরি রেহাই পাওয়ার কোনো আশার আলো এখনই দেখা যাচ্ছে না। তাই স্বস্তির বৃষ্টি কবে আসবে, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরমের অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে। গতকাল কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ২ ডিগ্রি বেশি। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা একই রকম থাকবে, ফলে ইদের সময় দক্ষিণবঙ্গে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র রোদের কারণে হিটস্ট্রোক ও ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে, তাই সতর্কতা নেওয়া জরুরি।
বাইরে বেরোলে পর্যাপ্ত জল পান করা, সানস্ক্রিন ব্যবহার এবং ছাতা বা ক্যাপ সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য অতিরিক্ত সাবধানতা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, হঠাৎ অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ বোধ করলে ছায়াযুক্ত স্থানে বিশ্রাম নেওয়া এবং শরীর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করা উচিত। তীব্র গরমের কারণে দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা হতে পারে, তাই সকালের দিকে বা বিকেলে বাইরে বের হওয়া ভালো। শহরজুড়ে পানীয় জল ও শীতল আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা উচিত বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, যাতে গরমজনিত সমস্যা এড়ানো সম্ভব হয়।
