স্বামীর তুতো ভাইয়ের সঙ্গে ছিল প্রেম। বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল দুই সন্তান। আর তাই নিজের গর্ভজাত দুই শিশুকেই বিষ খাইয়ে খুন করলেন মা। উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদে হাড়হিম ঘটনা। বছর পঁচিশের ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মুসকান।
গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা। রুরকালী গ্রাম থেকে ধৃত ওই মহিলার এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। তাঁদের নাম আরহান ও আনায়া। বয়স যথাক্রমে ১ বছর ও ৫ বছর। মহিলার বছর তেত্রিশের স্বামী ওয়াসিম আহমেদ কাজের সূত্রে গিয়েছিলেন চণ্ডীগড়ে। ঘর ফাঁকা থাকার সুবাদে দুই সন্তানের চা ও বিস্কুটের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয় অভিযুক্ত মহিলা। তা খেয়েই লুটিয়ে পড়ে দুই শিশু। এরপর কিছু না জানার ভান করে প্রতিবেশীদের কাছে ছুটে যান ওই মহিলা। বাচ্চারা আচমকাই অজ্ঞান হয়ে পড়েছে বলে জানান।
মহিলার অসংলগ্ন কথা দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন তারা। এদিকে বাচ্চাদুটিকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। স্থানীয় সিনিয়র পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার ভার্মা জানান, শিশুদের দেহে কোনও বাহ্যিক আঘাত মেলেনি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলেই বোঝা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। মৃতদের ভিসেরা রিপোর্টও পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
২০১৮ সালে ওয়াসিমের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মুসকানের। কিন্তু গত দুই বছর ধরে স্বামীর তুতো ভাই তথা বছর পঁচিশের জুনেদ আহমেদের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জুনেদের সঙ্গে নতুন করে সংসার গড়তেও চেয়েছিল মুসকান। শিশুদের খুনের ঘটনার পর থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। সেখানেই মুসকান স্বীকার করে সন্তানদের খুনের কথা।
খুনের ঘটনায় জুনেদও জড়িত বলে দাবি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনেদ ও মুসকান একসঙ্গে পালানোর ছক কষেছিল। সেইমতো বাচ্চাদের মেরে ফেলতে স্থানীয় একটি দোকান থেকে বিষ কেনেন জুনেদ। ইতিমধ্যেই দু’জনের বিরুদ্ধেই ভোপা থানায় এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মুসকানকে হেফাজতে নিলেও পলাতক জুনেদ। স্থানীয়রা জানান, কর্মসূত্রে ওয়াসিম বাইরে থাকতেন প্রায়শই। আর সেই সুযোগেই মুসকান ও জুনেদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।